Thursday, November 8, 2018

Liquor Business in Bangladesh - A License to lie

বারে গেলে যেমন আলো-আঁধারির খেলা, ধোঁয়া-ধোঁয়া ভাব, সবার কিছুক্ষণের জন্য বাস্তবতা ভুলে যাওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা চোখে পড়ে, পানীয়ব্যবসার ফ্যাক্টগুলোও তেমনি ধোঁয়াশাযুক্ত। বারগুলোর রমরমা অবস্থা দেখলে বোঝার উপায় নেই যে দেশের আইনে পানীয় আমদানি ও বিক্রির উপর রেস্ট্রিকশন আছে। কয়েক পদের বিয়ার, দামী হুইস্কি, ওয়াইন  - Glenfiddich, Glenlivet, Blue Label, Jack Daniel's (আর যাই হোক নামগুলা অনেক ক্যাচি 😜) আরো কত কি। সমস্যা একটাই - এগুলা অফিসিয়ালি আমদানি অথবা কেনা হয়না। 

দেশে ৬টি বেসরকারি এবং ২টি রাষ্ট্র পরিচালিত ডিপ্লোমেটিক বন্ডেড ওয়্যারহাউজ (Diplomatic Bonded Warehouse) আছে যারা শুল্কমুক্ত পানীয় (Liquor), সিগারে্ট আমদানি করতে পারে। অন্য অনেক দেশের মত আমাদের দেশেও ডিপ্লোম্যাটদের শুল্কমুক্ত আমদানির সুবিধা দেয়া হয়েছে। ডিপ্লোমেটদের কাছে ট্যাক্স এক্সেম্পশন সার্টিফিকেট (Tax Exemption Certificate) থাকে যা দিয়ে তারা এসব কিনতে পারেন। বাইরের পর্যটকরাও কিনতে পারেন, তবে তাদের শুল্ক দিতে হয়। আইনগতভাবে এসব ওয়্যারহাউজ থেকে জিনিসপত্র কেনা এবং হাতে পাওয়া বেশ সময়সাপেক্ষ এবং হ্যাপার ব্যাপার। দেশের পানীয়ব্যবসা ব্ল্যাক মার্কেটে চলে যাওয়ার সাথে ওয়্যারহাউজগুলোর জড়িত থাকার অভিযোগও পাওয়া গিয়েছে। শুল্কমুক্ত আমদানি/ক্রয়ের সুবিধার অপব্যবহার এবং স্মাগলিং - এই দুই উপায়ে দেশে মদ আমদানি ও বিক্রি হচ্ছে। মদের উপর ট্যাক্স ৬০৫% - এটা দিয়ে সরকারের কোন আয় হচ্ছেনা আর মদবিক্রিও কমছেনা কারণ প্রায় পুরা ব্যবসাটাই অবৈধ উপায়ে হচ্ছে।

নার্কোটিক্স ডিপার্টমেন্ট ২০১৬ সালে রাজধানীর ৪টি ক্লাবে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাদের মদ আমদানির কোন রেকর্ড পাওয়া যায়নি; কারো কারো আমদানির লাইসেন্সও নাই। দেশের একমাত্র অফিসিয়াল পানীয় আমদানিকারক ও বিক্রেতা পর্যটন কর্পোরেশন; তাদের কাছ থেকে কেনার সর্বশেষ রেকর্ড ৪-৫ বছর আগের। ৪টি ক্লাবের মাত্র একটি জিজ্ঞাসাবাদের জবাব দিয়েছিল যে ক্লাবের বিদেশী সদস্যরা তাদের নিজেদের ড্রিংক্স নিজেরা আনে। এছাড়া ক্লাব কর্তৃপক্ষ কেরু এন্ড কো থেকে ড্রিংক্স কিনার রেকর্ড দেখায়, যেটা আবার তাদের বার্ষিক রিপোর্টের হিসাবের সাথে মিলেনা  (Carew & Co [কেরু এন্ড কোং] is the only state-owned liquor producer and exporter of Bangladesh)। বলাই বাহুল্য এসব বার বা ক্লাবের বার্ষিক রিপোর্টে এ যত ধরণের ধাপ্পাবাজি সম্ভব সবই করা হয়।

স্মাগ্লিং এর মাধ্যমে মোটামুটি সহজেই পানীয়, সিগারেট ইত্যাদি দেশে আসছে; যেটাকে বলে Import through misdeclaration। Capital goods বা অভোগ্য পণ্যের নামে দেশের কাস্টমস হাউজগুলোতে মদ আসছে; ফাঁকফোকর দিয়ে ছাড়াও পেয়ে যাচ্ছে। কাস্টমসের চোখ এড়ানোর জন্য মদ বহনকারী ভ্যাসেলগুলোকে রাতের বেলা আনলোড করা হয়, তারপর নৌপথে সরিয়ে ফেলা হয় রাতারাতি। 

অনেকেই হয়তো জানেন, মদ বেচার জন্য শুধু বার, হোটেল বা ক্লাবগুলোরই লাইসেন্স থাকা লাগে তা না, মদ খাওয়ার জন্য আপনার কাছেও লাইসেন্স থাকা লাগবে। লাইসেন্স বা সার্টিফিকেটটায় এটাই বলা থাকে যে আপনার এমন কোন অসুখ আছে কিনা যেটার জন্য আপনার মদ খাওয়া দরকার। এটা আসলে ১৯৫০ সালের একটা আইন যেটায় বলা আছে, A person can possess and consume liquor after a government doctor certifies that the person needs to consume liquor on “medical grounds”। পুলিশি হয়রানি এড়ানোর জন্য মাত্র ২০০০ টাকা খরচ করে অনেকে যে নিজের পছন্দমত medical ground বানিয়ে নিচ্ছে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা 😝।

কথা হল প্রসেস ফলো করে কি বার, ক্লাব বা হোটেলগুলোতে পানীয়, সিগারেট ইত্যাদি সাপ্লাই দেয়া একেবারেই অসম্ভব? উত্তরঃ না, অসম্ভব না। কিন্তু প্রসেস ফলো করে জিনিসপাতি চেয়ে চিঠি দিলে ৫-৬ মাস পরে মাল আসে। প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা আর ৬০৫% ট্যাক্স কমায় দিলে ব্ল্যাক মার্কেটের লাগাম অনেকাংশে টেনে ধরা যেত।

Source: The Daily Star

No comments:

Post a Comment