Tuesday, January 26, 2021

Rise and Fall of Keya Cosmetics

 
টিভি, রেডিওতে প্রচারিত ৯০ এর দশকের বিজ্ঞাপনগুলো আমাদের এখনো মনে আছে। আর সেই সময়ে টিভিসিই ছিল  প্রোডাক্ট প্রমোশনের প্রধান মাধ্যম। কোম্পানিগুলোও অনেক আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপণ প্রচার করতো। আর সেসব বিজ্ঞাপণের তালিকা তৈরি করলে কেয়া কসমেটিক্সের বিজ্ঞাপণগুলো প্রথম দিকেই থাকবে। সেই সময় কসমেটিক্স ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে কেয়া কসমেটিকস এর পণ্যগুলো বেশ জনপ্রিয় ছিল। নারিকেল তেল, বিউটি সোপ, লিপজেলসহ বিভিন্ন কসমেটিকস পণ্য বিক্রির পাশাপাশি আকর্ষণীয় জিংগেলের বিজ্ঞাপণ প্রচারের মাধ্যমে কোম্পানিটি শক্তিশালী মিডিয়া পজিশন অর্জন করে এবং কম সময়ের মধ্যেই ১৫% এর বেশি মার্কেট শেয়ার দখল করে ফেলে। কিন্তু পরবর্তীতে কোম্পানিটির মালিকপক্ষ গার্মেন্টস ব্যবসার দিকে ঝুঁকে পড়লে তাদের মূল কসমেটিকস বিজনেস থেকে ফোকাস সরে যায়। ফলশ্রুতিতে অর্জিত মার্কেট শেয়ার হারিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে কোম্পানিটি।
 
Cosmetics & Toiletries Industry

শুরুতে সংক্ষেপে কসমেটিক্স এন্ড টয়লেট্রিজ সেক্টরটি নিয়ে কিছু বলা যাক। ২০১৫ সালে এই সেক্টরের টার্নওভার ছিল ১৫০ বিলিয়ন টাকা যা তখনকার জিডিপির প্রায় ১%। ১২% এর বেশি প্রবৃদ্ধির এই সেক্টরে দেশী কোম্পানিগুলোর ডমিনেন্স বেশী। মার্কেট শেয়ারের দিকে থেকে টপ প্লেয়ারগুলোর মধ্যে ইউনিলিভার বাংলাদেশ, কোহিনূর, স্কয়ার, কাশেম গ্রুপ, কল্লোল গ্রুপ, মৌসুমী ইন্ডাস্ট্রিজ এবং ডেল্টা গ্রুপ উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে এই সেক্টরের টার্নওভার ৩.২ বিলিয়ন ডলার বা ২৭০ বিলিয়ন টাকা বলে ধারণা করা হয়। 

বিজ্ঞাপণভিত্তিক প্রমোশনের উপর নির্ভরশীল হওয়ার কারণে কসমেটিক্স এন্ড টয়লেট্রিজ কোম্পানিগুলোর অপারেটিং এক্সপেন্সের একটা বড় অংশ পণ্যের প্রমোশনের জন্য বরাদ্দ রাখতে হয়। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের একটি রিপোর্টে দেখানো হয়, ad share % এর দিক থেকে ১১% শেয়ার নিয়ে টেলিকম সেক্টরের সাথে যুগ্মভাবে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল কসমেটিক্স এন্ড টয়লেট্রিজ সেক্টর। আগে কসমেটিক্স কোম্পানিগুলো টিভি বিজ্ঞাপণ ও সেলিব্রিটি এন্ডরসমেন্টের উপর বেশী নির্ভরশীল থাকলেও বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইভেন্ট এরেঞ্জমেন্ট কসমেটিক্স কোম্পানিগুলোর প্রমোশনের উল্লেখযোগ্য অংশ দখল করেছে।

Source: BBF
 
History of Keya
 
কোম্পানির বর্তমান চেয়ারম্যান মিঃ আব্দুল খালেক পাঠান ১৯৮৩ সালে খালেক এন্ড কোং নামের একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন এবং ইটের ব্যবসা শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি সাবানের ব্যবসার দিকে ঝুঁকে্ন, এবং ১৯৯৬ সালে ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে গাজীপুরের জারুনে একটি ফ্যাক্টরি প্রতিষ্ঠা করেন। একই বছর খালেক এন্ড কোং এর সিস্টার কন্সার্ন হিসেবে কেয়া কসমেটিক্সের যাত্রা শুরু হয় এবং পরের বছরে বিউটি সোপ প্রোডাকশনের মাধ্যমে কোম্পানিটি কমার্শিয়াল অপারেশন শুরু করে। পরবর্তীতে মূল কোম্পানি খালেক এন্ড কোং এর নাম পরিবর্তিত হয়ে হয় কেয়া গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজ। ১৯৯৯ সালে কেয়া কসমেটিক্স পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে লিস্টেড হয় এবং ২০০১ সালে শেয়ারবাজারে অন্তর্ভুক্ত হয়। 
 
Rise & Expansion

শুরুর দিকে কেয়ার পোর্টফোলিওতে মূল প্রোডাক্ট বলতে শুধুমাত্র কেয়া সুপার বিউটি সোপ থাকলেও পরবর্তীতে ধীরে ধীরে বিভিন্ন fragrance, size, color এর আরো বেশ কিছু ভ্যারিয়েন্ট প্রোডাক্ট যোগ করা হয়। এগুলোর মধ্যে কেয়া লেমন বিউটি সোপ, ফেয়ারনেস বিউটি সোপ, স্কিনকেয়ার বিউটি সোপ, হারবাল বিউটি সোপ, বেবী সোপ, বল সাবান, লাইফগার্ড সোপ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও পরবর্তীতে কোম্পানিটি পেট্রোলিয়াম জেলী, লিপজেল, ডিটারজেন্ট পাউডার, শেভিং ক্রিম, শ্যাম্পু ইত্যাদি উৎপাদন শুরু করে। কোম্পানিটির পণ্যগুলোর প্রধান কাঁচামালের মধ্যে রয়েছে Sodium salt, Palm oil,  এবং RBD (Refined, Bleached, & Deodorized) Coco Oil। এসব কাঁচামাল আমদানি করা হয় মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইটালি, ফ্রান্স, জার্মানি ইত্যাদি দেশ থেকে। এছাড়াও Swiss company clariant এবং জার্মান কোম্পানি BASF থেকে কালারিং ম্যাটেরিয়াল আমদানি করে কেয়া। অন্যদিকে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ এবং সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে কেয়ার প্রোডাক্টসমূহ রপ্তানি করা হয়। 
 
প্রতিষ্ঠার পরের দশকের সময়টায় অর্থাৎ ২০০০-২০০৯ সালে কেয়া বাংলাদেশ কসমেটিকস মার্কেটে ভাল অবস্থানে অর্জন করতে সক্ষম হয়। আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপণভিত্তিক মার্কেটিং, এবং দাম তুলনামূলক কম রাখার কারণে কেয়া মোটামুটি মাঝারি মানের মার্কেট শেয়ার অর্জন করতে সক্ষম হয়। ২০১০ সালে কেয়ার মার্কেট শেয়ার ছিল ১৬%। 
 
- Soap portfolio
 
বিভিন্ন fragrance, কালার এবং সাইজের উপর ভিত্তি করে কেয়া তার সোপ পোর্টফোলিও গঠন করেছে। কেয়া লেমন বিউটি সোপকে কেয়ার সবচেয়ে সাকসেস্ফুল ব্র্যান্ড মনে করা হয়। এর পরেই অবস্থান কেয়ার সবচেয়ে পুরোনো ব্র্যান্ড কেয়া সুপার বিউটি সোপ। তিনটি fragrance ও ভিটামিন ই সমৃদ্ধ বিউটি সোপ উতপাদনের মাধ্যমে বিউটি বার সোপ ক্যাটাগরিতে একসময় মার্কেট লিডারদের সাথে পাল্লা দিয়ে ব্যবসা করতো কোম্পানিটি। পরবর্তীতে এই সুপার বিউটি সোপের মিনি ভার্সনও বাজারে আনে কেয়া। এছাড়া হেলথ বার সোপ ক্যাটাগরিতে কেয়া লাইফগার্ড এর কম্পিটিটর ছিল লাইফবয়, স্যাভলন ও ডেটল। পরবর্তীতে বল সাবান এবং গ্লিসারিন লন্ড্রি সোপ উৎপাদনের মাধ্যমে লন্ড্রি সোপ মার্কেটেও প্রবেশ করে কেয়া। ধীরে ধীরে বেবি সোপ, হারবাল বিউটি সোপ ও স্কিনকেয়ার সোপ উতপাদনের মাধ্যমে সোপ ইন্ডাস্ট্রির প্রায় সবগুলো সেগমেন্টে প্রবেশ করেছে কেয়া। অল্প সময়ের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জনের দিক থেকে কেয়া বল সাবানের কথা না বললেই নয়। 
 
সাবানের কাঁচামাল সরবরাহকারী backward linkage company হিসেবে ২০০৪ সালে প্রায় ৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রতিষ্ঠা করা হয় Keya Soap Chemicals Ltd.। এই কোম্পানির ফ্যাক্টরিতে সাবান উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল সোপ ন্যুডলস উৎপাদন করে কেয়া। শুরুতে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে সোপ ন্যুডলস আমদানি করা হত। এসিআই, ইউনিলিভার বাংলাদেশ, রেকিট বেঙ্কাইজার, স্কয়ার টয়লেট্রিজসহ কাছে বিভিন্ন দেশী কোম্পানির কাছে সোপ ন্যুডলস বিক্রি করে কেয়া।
 
 
- Other Products
 
কেয়া কসমেটিক্সের অধীনে ৪টি বিজনেস ইউনিট আছে - ১) কসমেটিকস ডিভিশন ২) Knit Composite Division 3) Spinning Division 4) Cotton Division।  কসমেটিকস ডিভিশনের দুইটি কোম্পানি আছে - Keya Soap Chemicals Ltd. এবং কেয়া ডিটারজেন্ট লিমিটেড। ডিটারজেন্ট পোর্টফোলিওতে আছে লেমন ডিটারজেন্ট, White plus detergent, Super excel detergent এবং Super Jet detergent Powder। 
 
কোম্পানি ম্যানেজমেন্ট  ১৯৯৯ সালে স্পিনিং বিজনেস শুরু করে। তারও পরে ২০০৪ সালে গড়ে তোলা হয় Keya Cotton Mils, ২০০৫ সালে Keya Knit Composite Factory, এবং ২০০৮ সালে Keya Yarn Mills Ltd.। সেইসাথে Spinning Division এর অধীনে Keya Spinning Mills ও গঠন করা হয়। এসব কোম্পানিতে Readymade Garments, Knitted Garments, ও দরকারী কটন উৎপাদিত হয়। ২০১৫ সালে সবগুলো কোম্পানি কেয়া কসমেটিক্সের অধীনে একত্রিত করা হয়।
     


Reasons of Fall

- Entering into Garments Business

২০০০-০৯ দশকে কসমেটিকস মার্কেটে যে সন্তোষজনক অবস্থান অর্জন করেছিলো কেয়া, পরের দশকে কেয়ার সেই অবস্থান ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। কসমেটিক্স ব্যবসায় stability এবং শক্ত অবস্থান পাওয়ার আগেই গার্মেন্টস ব্যবসার মত ক্যাপিটাল ইন্টেন্সিভ ব্যবসাতে ঝুঁকে পড়ার কারণে মূল ব্যবসাতে থেকে ফোকাস সরে যায় কোম্পানিটি। ফলে কসমেটিক্স ব্যবসার অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। ২০১৫ সালে কসমেটিক্স সেক্টরে কোম্পানিটির মার্কেট শেয়ার দাঁড়ায় ৫%। ২০১২-১৩ সালে যেখানে কেয়ার লোকাল সেলস ছিল ২৬০ কোটি, ২০১৭ তে তা প্রায় অর্ধেকে নেমে ১৪০ কোটিতে দাঁড়ায়। 

কসমেটিকস পণ্যের বিপুল চাহিদা থাকা সত্ত্বেও কোম্পানির ম্যানেজমেন্টের কসমেটিক্স বিজনেস এক্সপানশনের জন্য কোন কার্যক্রম চোখে পড়ছেনা। টিবিএসের একটি রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, কর্মী সংকটের দরুণ দুটি প্রোডাকশন ইউনিটে small scale -এ ডিটারজেন্ট ও সাবান উৎপাদন হচ্ছে।

- Becoming a Distressed company

২০০০ সালের দিকে দেশের গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি যেমন বড় হচ্ছিলো, সেইসাথে পণ্যের চাহিদাও ছিল। এই সুযোগটাই কেয়া নিতে চেয়েছিলো এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে কয়েকটি ফ্যাক্টরি নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। এসব ফ্যাক্টরি নিমার্ণ ও অন্যান্য বিনিয়োগ বাবদ অনেক বেশি লোন নিয়ে ফেলে কোম্পানিটি। এছাড়াও ২০১০ সালে গ্লোবাল মার্কেটে কটন প্রাইসের ভলাটিলিটির কারণে কোম্পানিটি উচ্চ দামে কটন কিনে। ফলে production cost বেড়ে যায় এবং আশানুরূপ প্রফিট হয়নি। তার উপর ২০১০-১১ সালে কোম্পানিটির প্রায় ৫০০ কোটি টাকার এক্সপোর্ট অর্ডার ক্যান্সেল হয়ে যায়। মূলত ঐ সময় থেকেই কোম্পানিটি লোন পরিশোধ করতে সমস্যার সম্মুখীন হয়। লোন পরিশোধের জন্য বিভিন্ন ইউনিট মার্জ করা, পুজিবাজারে শেয়ার ইস্যু করাসহ নানা কার্যক্রম করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। ২০১২ সালে কোম্পানিটির মালিকের নাম বিভিন্ন ব্যাংকের ডিফল্টার লিস্টে চলে আসে। সর্বশেষ প্রাপ্ত ২০১৭-২০১৮ annual report এ কেয়া কসমেটিকস এর প্রায় ১৭০০ কোটি টাকার লোন আউটস্ট্যান্ডিং ছিল। ২০১৯ সালের ২৪ জুন প্রকাশিত টপ ৩০০ জন লোন ডিফল্টারের তালিকায় পুজিবাজারের ১০টি কোম্পানির মধ্যে কেয়ার নাম ছিল এবং ডিফল্টেড লোনের পরিমাণ ছিল প্রায় ১০০ কোটি টাকা।  বর্তমানে লোন পরিশোধ স্বাভাবিক রয়েছে বলে বিভিন্ন ব্যাংক সূত্র হতে জানা যায়।  

- Lack of enough segmentation 

গত দশকে কেয়া তাদের প্রোডাক্ট নিয়ে কোন কাজ করেনি। তাদের প্রোডাক্ট ক্যাটাগরি আগেরগুলোই রয়েছে এবং ঐসব ক্যাটাগরিতে আগের প্রোডাক্টগুলোই উৎপাদিত হচ্ছে সীমিৎ আকারে। আগের সেই বল সাবান, ডিটারজেন্ট, শ্যাম্পু, বিউটি সোপ-ই এখনো বিক্রি হচ্ছে তাও কম পরিমাণে। করা হয়নি বয়সভিত্তিক বা লিংগভিত্তিক কোন সেগমেন্টেশনও। বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলো এবং ভাল কসমেটিক্স ব্র্যান্ডগুলি পুরুষ ও মহিলা কেন্দ্রিক পণ্য ম্যানুফ্যাকচার করে unisex product positioning করেছে এবং তাদের মার্কেট শেয়ার বাড়িয়েছে। কেয়ার সেরকম কোন কার্যক্রম দেখা যায়নি।

- Low Share of Voice

কোন কোম্পানির Share of voice হল ঐ কোম্পানির advertising ও marketing / ঐ কোম্পানির সেক্টরের মোট advertising ও marketing। প্রোডাক্ট মার্কেটিং এন্ড প্রমোশনাল ইকোসিস্টেম গত পাঁচ বছরে অনেক পরিবর্তিত হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং একটা বড় অংশ দখল করেছে। আগের সেলিব্রিটি Endorsement-ও এখন অনেক বেশি সোশ্যাল মিডিয়া নির্ভর। এছাড়া traditional TVC, Local ও International event স্পন্সরের মাধ্যমে প্রমোশনতো আছেই। সব মিলিয়ে একটি বা দুইটি মাধ্যমের উপর নির্ভরশীল না হয়ে ৩৬০ ডিগ্রী বা TTL marketing strategy-ই ফলো করছে কোম্পানিগুলো। যেমন লাক্স পুরোনো ও নতুন টিভিসি প্রচারের পাশাপাশি বিভিন্ন ড্রামা সিরিয়ালের টাইটেল স্পন্সরশীপ, লাক্স- চ্যানেল আই সুপারস্টার-এর স্পন্সরশীপ, বিলবোর্ড মার্কেটিং, নিউজপেপার এড - ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের প্রোডাক্ট প্রমোশন করে। এছাড়াও ডেটলের গ্লোবাল হ্যান্ডওয়াশিং ডে উৎযাপন, লাইফবয়ের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে অন্তর্ভুক্তি করার ঘটনা না বললেই নয়। এদিক থেকে আশ্চর্য ব্যতিক্রম কেয়া। কোম্পানিটি সবসময় টিভিসি ভিত্তিক প্রমোশনকে প্রাধান্য দিয়ে এলেও ২০১৬ সালের পর কেয়ার কোন টিভিসি প্রচারিত হয়নি। ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান "ইত্যাদি"র স্পন্সর হিসেবে এখনো কাজ করছে কেয়া, কিন্তু আমরা সবাই জানি জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে ইত্যাদির অবস্থান আজ কোথায়।

- Absence of positioning

প্রতিষ্ঠার বছরগুলোতে সব ধরণের কাস্টমারদেরই টার্গেট করেছিল কেয়া। মফস্বল ও গ্রামের মানুষদের আকৃষ্ট করতে  কম্পিটিটরদের তুলনায় ৬-৭% দাম কমও রাখতো কোম্পানিটি। পরবর্তী সময়ে product positioning ঠিকমত করতে পারেনি কোম্পানিটি। বড় কোম্পানিগুলো যেমন তাদের প্রোডাক্টের সঠিক পজিশনিং-এর মাধ্যমে তাদের প্রাইসিং স্ট্র্যাটেজি ঠিক করেছে, কেয়া সেখানে "Just Another Beauty Soap" হিসেবে মার্কেটে থেকে গেছে। অন্য সোপ ম্যানুফ্যাকচারাররা বিউটি সোপের পাশাপাশি এন্টিএজিং, আয়ুর্বেদিক প্রোডাক্টগুলোতেও সমান ট্র্যাকশন অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। সেখানে কেয়ার রেভিনিউ বিউটি সোপ কেন্দ্রিকই রয়ে গেছে বছরের পর বছর।

- Weak Product Distribution

Product distribution এর ক্ষেত্রে Traditional model-ই follow করে আসছে কেয়া। আর তা হল - Manufacturer >>>> Wholesaler >>> Retailer >> Consumer। অর্থাৎ অন্যান্য কসমেটিক্স কোম্পানিগুলোর মত Intermediary গুলোর উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। আবার ডিমান্ড অনুযায়ী প্রোডাক্টের অপ্রতুলতা, এবং লো মার্জিনের কারণে wholesaler ও রিটেইলারদের কেয়ার প্রোডাক্টের ব্যাপারে আগ্রহ কম। অন্যান্য কম্পানিগুলো তাদের wholesaler ও রিটেইলারদের পর্যাপ্ত ইনসেন্টিভ প্রদানের মাধ্যমে ভাল রিলেশনশীপ মেইন্টেইন করে। এক্ষেত্রে বেশ কয়েক বছর ধরে কেয়া বেশ উদাসীন।

Keya Cosmetics in Share Market

শেয়ারবাজারে কেয়ার অবস্থান সন্তোষজনক নয়। ২০১০ সালের পর থেকে কোম্পানিটি কোন ক্যাশ ডিভিডেন্ড দেয়নি। ২০১১ সালে কেয়া রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ১০০ কোটি টাকা উত্তোলন করে লোন পরিশোধ করার জন্য। লোন পরিশোধ করার জন্য মালিকপক্ষ বিভিন্ন সময়ে শেয়ার বিক্রিও করেছে। কোম্পানিটির স্পন্সর ডিরেক্টরদের শেয়ারহোল্ডিং এই বছরের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ছিল ৪৬%, যা ২০১৭ সালে ছিল ৬৩%।

করোনাভাইরাসের কারণে  যেখানে দেশী ও বিদেশী হাইজিন ও টয়লেট্রিজ প্রোডাক্ট ম্যানুফ্যাকচারাররা  তাদের পণ্যের উচ্চ চাহিদার কারণে প্রফিটে প্রবৃদ্ধি দেখছে, সেখানে কিছু ব্যতিক্রমের মধ্যে একটি হল কেয়া কসমেটিক্স। ২০১৭-১৮ সালের পর কোন annual report প্রকাশিত হয়নি, প্রকাশিত হয়নি কোন quarterly reportও। গত দুই বছর ধরে AGM বন্ধ থাকার পর গত অক্টোবর মাসে ২২তম AGM ক্করে কোম্পানিটি।  এছাড়াও সম্প্রতি কেয়ার রেভিনিউ ও প্রফিট রিপোর্টিং নিয়ে তদন্ত করছে বাংলাদেশের ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং রেগুলেটরি বডি Financial Reporting Council (FRC)।

 

Reference:

  1. https://www.coursehero.com/file/p7oka8c/Chapter-2-Organizational-Overview-21-Introduction-The-Keya-Cosmetics-Ltd-is-one/
  2. https://medium.com/@milky.mahmud/bangladeshs-booming-beauty-market-2c98236647b6
  3. https://www.dhakatribune.com/opinion/special/2019/01/26/the-economy-of-the-fairness-industry
  4. https://bbf.digital/wp-content/uploads/2015/10/20.jpg?189db0&189db0
  5. https://bbf.digital/cosmetics-toiletries-industry
  6. https://docplayer.net/34262676-A-report-on-cosmetic-toiletries-industries-of-bangladesh-mansur-ahamed-ph-d-research-department-jbbc-corporation.html
  7. https://www.globalcosmeticsnews.com/local-players-now-dominate-in-booming-bangladeshi-cosmetics-and-toiletries-market/
  8. https://www.researchgate.net/publication/326468905_Bangladesh's_Dynamic_Toilet_Soap_Market_The_Case_of_Keya
  9. http://milonanjel.blogspot.com/2008/07/advertising-and-promotional-strategy-of.html?m=1
  10. https://www.slideshare.net/ontoromi/analyzing-the-strategic-hr-environment-analysis-of-keya-cosmetics-ltd-under-keya-knit-composite-division
  11. https://www.daily-sun.com/arcprint/details/401521/Names-of-300-loan-defaulters-revealed-/2019-06-23
  12. https://www.termpaperwarehouse.com/essay-on/Report-On-Keya-Super-Beauty-Soap/36955
  13. company website, annual report

 

 

 

Thursday, January 21, 2021

Nagad's Journey so far

DFS Sector Overview
 
গত দশকে বাংলাদেশের ডিজিটাল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস বা DFS সেক্টরের প্রবৃদ্ধি ছিল লক্ষণীয়। এই সময়ে বিকাশ, রকেট, নগদ ও সিউরক্যাশের উত্থানের কথা না বললেই নয়। বিভিন্ন সময় আনা হয়েছে নতুন নতুন পলিসি; ইন্ডাস্ট্রি প্লেয়াররাও Horizontal এবং Vertical partnership এর মাধ্যমে বিভিন্ন ইনোভেটিভ প্রোডাক্ট বা সার্ভিস এনেছে। শুধু public-private partnership-ই নয়, Government-to-person বা G2P ফাইনান্সিং এবং ই-কমার্স ও এফ-কমার্স সেক্টরের উত্থান ডিজিটাল ফাইনান্সিয়াল ইনক্লুশনে সাহায্য করেছে যা DFS সেক্টরের প্রবৃদ্ধি বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণে। 

গত দশকের DFS সেক্টরের গ্রোথের এই সময়টাকে তিন ভাগে ভাগ করা যাক - 

a) 2010 to 2013 - Bank-led vs MNO-led: এই সময়ের শুরুতে দেশের মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস বা MFS model bank-based হবে নাকি telco-based হবে এটা নির্ধারণের জন্য বেশ কিছু বিচ্ছিন্ন কার্যক্রম চলতে থাকে। অবশেষে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০১১ সালে MFS guideline প্রনয়নের মাধ্যমে bank-led MFS model-এ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এই সময়টায় MFS provider company গুলোর সাথে কর্পোরেট পার্টনারশীপের মাধ্যমে অনেক কোম্পানি payroll disbursement শুরু করে।

b) 2014 to 2016 - Rise of Agent Banking and Public-Private Partnerships (PPP) in MFS: এই সময়ে MFS কোম্পানিগুলোর সাথে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সম্মিলিত উদ্যোগে দেশব্যাপী এজেন্ট নেটওয়ার্ক গঠন হওয়া শুরু হয়। এছাড়াও ব্যাংক এশিয়া এবং ডাচ বাংলা ব্যাংকের হাত ধরে এজেন্ট ব্যাংকিং এর যাত্রা শুরু হয়। 

২০১৬ সালের শুরু থেকে MFS provider-রা প্রবাসী বাংলাদেশীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর ব্যবস্থা করে দিতে বিভিন্ন Money Transfer Operator -দের সাথে চুক্তি সাক্ষর করে। এছাড়াও ইকমার্স কোম্পানিগুলোও বিকাশ, রকেটসহ অন্যান্য MFS provider গুলোর সাথে যুক্ত হয় যার ফলে কনজিউমারদের জন্য অনলাইনে কেনাকাটা সহজ হয়।

c) 2017 to 2019 - Tech Disruption in DFS: এই সময়ে গ্রামাঞ্চলে এজেন্ট ব্যাংকিং জনপ্রিয় হয়। iPay ও Dmoney, Payment Service Provider বা PSP license এর অধীনে অনলাইন পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম হিসেবে যাত্রা শুরু করে। এবং 2019 সালে আরেকটি PPP Model এর অধীনে MFS প্রোভাইডার হিসেবে যাত্রা শুরু করে নগদ।

 

History of Nagad

Bangladesh Post Office বা BPO (৫১%) এবং Third Wave Technologies (TWTL - ৪৯%) এর যৌথ মালিকানায় প্রথম State-run MFS provider হিসেবে ২০১৯ সালের ২৬ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে নগদ। তার আগেই দেশব্যাপী পোস্ট অফিসের প্রায় ১০,০০০ ব্রাঞ্চে নগদের সার্ভিস দেয়ার জন্য ব্র্যান্ডিং ও Technological Infrastructure প্রস্তুত করে গ্রাউন্ডওয়ার্ক করে রাখা হয়। BPO এর আগে ২০১০ সালে সহজে টাকা লেনদেন ও পেমেন্টের জন্য Postal Cash Card এবং Electronic Money Transfer System (EMTS) চালু করেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় মোবাইল মানি ট্রান্সফার প্রোভাইডার হিসেবে বাংলাদেশ পোস্ট অফিস এক্ট ২০১০ এর অধীনে "নগদ" এর যাত্রা শুরু। শুরু থেকেই মূলত গ্রামাঞ্চলে Financial Inclusion বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে নগদ।

 
Nagad's Journey so far
 
টেকভিত্তিক Financial Inclusion, Product diversification, Process simplification, এবং Cross-institutional integration এর ক্ষেত্রে নগদ শুরু থেকেই জোর দিয়ে আসছে। MFS provider গুলোর মধ্যে নগদই প্রথম ডিজিটাল Know Your Customer বা KYC registration প্রক্রিয়া শুরু করে। এক্ষেত্রে কাস্টমার তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি এবং সেলফি তুলে নগদের প্ল্যাটফর্মে দিলে প্রথমে ইলেকশন কমিশন ডাটাবেইজের সাথে ক্রসম্যাচ করা হয় এবং সেই পরিচয়পত্র স্ক্যান করার মাধ্যমে KYC form-এর জন্য যাবতীয় তথ্য পূরণ করে ফেলা হয়।

MFS provider গুলোর মধ্যে নগদই প্রথম ডিজিটাল Know Your Customer বা KYC registration প্রক্রিয়া শুরু করে। এক্ষেত্রে কাস্টমারের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রথমে ইলেকশন কমিশন ডাটাবেইজের সাথে ক্রসম্যাচ করা হয় এবং সেই পরিচয়পত্র স্ক্যান করার মাধ্যমে KYC form-এর জন্য যাবতীয় তথ্য পূরণ করে ফেলা হয়। 

মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক একাউন্ট ওপেনিং নগদের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। মোবাইল নম্বর বা সিম এর জন্য বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন আগেই সম্পন্ন করেছিল মোবাইল অপারেটররা। নগদ এই তথ্য কাজে লাগায়। কাস্টমাররা তাদের মোবাইল নম্বররের সাহায্যে খুব সহজেই একাউন্ট ওপেন করতে পারে। বাকি দরকারি তথ্য অপারেটরদের কাছ থেকে নিয়ে নেয়া হয়। বায়োমেট্রিক একাউন্ট ওপেনিং-এর ক্ষেত্রে শুরুতে শুধুমাত্র টেলিটকের সাথে চুক্তিবদ্ধ থাকলে পরবর্তীতে গ্রামীণফোন ও রবির সাথেও চুক্তি স্বাক্ষর করে নগদ। Banglalink এর সাথে একই ধরণের চুক্তিও সম্পন্ন হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। 

বায়োমেট্রিক একাউন্ট ওপেনিং এর ক্ষেত্রে রবি-এয়ারটেল ও টেলিটক গ্রাহকেরা *167# ডায়াল করে এরপর পিন সেট করার মাধ্যমে সহজেই একাউন্ট করতে পারছেন। আগের মত NID বা ছবি দেয়ার প্রয়োজন হচ্ছেনা বলে কয়েক সেকেন্ডে MFS গ্রাহক হওয়া সম্ভব হচ্ছে। গ্রামীণফোনের সাথে ট্রায়াল পর্যায় শেষ হলে আরো বেশি সংখ্যক মানুষ সহজেই mobile money account খুলতে পারবে।  

গত বছরের জুলাইয়ে নগদের পক্ষ থেকে মোবাইল টপ আপ বিজনেসে প্রবেশ করার ঘোষণা আসে। ডেইলি স্টারের একটি রিপোর্ট অনুসারে, ২০১৮ সালে ২৬০০০ কোটি টাকারও বেশি রিচার্জ হয়েছে। এক্ষেত্রে Master SIM Card চালু করার প্রস্তাব করা হয় যার মাধ্যমে মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটররা BPO-এর ডিস্ট্রিবিউটরদের সাথে কানেক্টেড থাকবে এবং তাদের থেকে এজেন্ট ও রিটেইল পয়েন্ট হয়ে কাস্টমারের কাছে টাকা পৌঁছাবে।

বিষয়টি এখনো আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে, এবং গত এক বছরের মধ্যে এই বিষয়ে কোন অগ্রগতি চোখে পড়েনি, মোবাইল অপারেটররা এই বিষয়ে তাদের অনিচ্ছা প্রকাশ করেছে। কারণ এক্ষেত্রে টপআপ বিজনেসের পুরো কন্ট্রোল একটি গভর্নিং বডির হাতে চলে যায়। আর টপআপ বিজনেসের মডেল অলরেডি প্রতিষ্ঠিত। এক্ষেত্রে নতুন এজেন্ট নিয়োগ খরচসাপেক্ষ ব্যাপার এবং অলরেডি প্রতিষ্ঠিত ডিস্ট্রিবিউশন মডেলটি নষ্ট হয়ে যায়। 

প্রতিষ্ঠার সাত মাসের মাথায়, ২০১৯ সালের ১৩ অক্টোবর কাস্টমার সংখ্যার দিক থেকে ডাচ বাংলা ব্যাংকের MFS Provider, রকেটকে ছাড়িয়ে যায় নগদ। নগদ হতে পাওয়া তথ্যসূত্র এবং tbs এর রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে নগদ ইউজারের সংখ্যা সাড়ে তিন কোটি, এবং এই বছরের জুলাই পর্যন্ত এক্টিভ ইউজারের সংখ্যা ছিল ২ কোটির কাছাকাছি। ব্যবহারকারীদের সংখ্যার দিক দিয়ে নগদ MFS provider-দের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।

প্রতিষ্ঠার দশ মাসের মাথায় দৈনিক ১০০ কোটি টাকার ট্রান্সেকশনের মাইলস্টোন অতিক্রম করে নগদ। এই বছরের শুরু থেকে সব ধরণের সরকারি ভাতা নগদের মাধ্যমে লেনদেনের জন্য নীতিমালা জারি করা হয়। যেটি নগদের ট্রান্সেকশনের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করেছে। বিজনেস এক্সপানশনের অংশ হিসেবে মীনাবাজার, ইউনিমার্ট, বে এম্পোরিয়াম, ওয়াল্টন, এর মত ১২ হাজারের বেশি কোম্পানির মার্চেন্ট পার্টনার হিসেবে কাজ করছে নগদ।  সম্প্রতি কুরিয়ার সার্ভিস প্রোভাইডার Paperfly এর সাথেও চুক্তি সম্পন্ন করেছে নগদ যার মাধ্যমে Paperfly এর গ্রাহকেরা পণ্য পাওয়ার পরে নগদের মাধ্যমে পেমেন্ট করার সুযোগ পাবে। এছাড়াও নগদ ৫০০র বেশি অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্মের সাথে যুক্ত হয়েছে যার ফলে ইকমার্স সেক্টরের সাম্প্রতিক pandemic-driven growth এর বেনিফিট নিতে পেরেছে কোম্পানিটি। মার্চের আগে ইকমার্স সেক্টরে যেখানে নগদের মাধ্যমে লেনদেন ছিল কয়েক কোটি টাকা, এপ্রিলের পর সেটা একশ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। 

বাংলাদেশের MFS সেক্টরে গত দশকে বিকাশ অনেকটা একচেটিয়া ব্যবসা করেছে। নগদের অন্যতম লক্ষ্য ছিল এই মনোপলি ভাঙ্গা। সেই লক্ষ্যে তারা ভালই এগিয়েছে বলা যায়। ক্যাশআউট চার্জ কমানো এক্ষেত্রে একটি্ গুরুতবপূর্ণ পদক্ষেপ। এই বছরের অক্টোবর মাস থেকে ক্যাশ আউট চার্জ হাজারে ৯.৯৯ টাকায় নামিয়ে আনে নগদ। অ্যাপ ব্যবহারকারীরা এই চার্জের সাথে ভ্যাটসহ মোট ১১.৪৯ টাকা পরিশোধ সাপেক্ষে ক্যাশ আউট করতে পারে। USSD এর মাধ্যমে ক্যাশ আউটের ক্ষেত্রে ভ্যাটছাড়া হাজারে ১২.৯৯ টাকা এবং ভ্যাটসহ ১৪.৯৪ টাকা পরিশোধ করতে হবে। উভয়ক্ষেত্রে কমপক্ষে ২১০০ টাকা ক্যাশ আউটের শর্ত প্রযোজ্য।  

Traditional banking service গুলোকে অনলাইনে বা ডিজিটাল পদ্ধতিতে দেয়া থেকেই Neobank কনসেপ্টের উতপত্তি। মাল্টিন্যাশনাল ব্যাংকগুলো তাদের অনেকগুলো সার্ভিস অনলাইনেই দেয়। কিন্তু কোন ধরণের ফিজিকাল ব্রাঞ্চ ছাড়া সব ধরণের ব্যাংকিং সার্ভিস অনলাইনে দেয়ার concept-ই Neobank। নগদের সাথে সাথে ব্যাংক এশিয়াও দেশের প্রথম Neobank হওয়ার দৌড়ে আছে। এজন্য তাদের উভয়কেই বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে ক্লিয়ারেন্সের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। নগদ পুরোদমে চেষ্টা করছে এই ব্যাংকিং লাইসেন্স পাওয়ার। নগদের লক্ষ্য হল তাদের সবগুলো সার্ভিস ডিজিটাল চ্যানেলের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেয়া। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ পোস্ট অফিসের সাহায্যও পাবে নগদ। যদি কাস্টমারদের ব্রাঞ্চে যেতেও হয় তাহলে পোস্ট অফিসের শাখা অফিসগুলোর মাধ্যমে সেবা নিতে পারবে তারা। এক্ষেত্রে নগদের নতুন কোন এস্টাব্লিশমেন্ট cost ব্যয় করতে হবেনা। 

প্যান্ডেমিকের মধ্যে বেশ কিছু প্রশংসনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে নগদ। কোরবানি ঈদের আগে e-Commerce Association of Bangladesh (e-CAB) ও Bangladesh Dairy Farmers Association (BDFA) এর সাথে সম্মিলিত উদ্যোগে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন অনলাইন Quarbani Haat চালু করে যেখানে disbursement partner হিসেবে নগদ কাজ করেছে। এছাড়াও কোভিড-১৯ পরীক্ষা করানোর জন্য ডিজিটাল পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার হিসেবে কাজ করছে কোম্পানিটি।


Nagad vs Other MFS Provider

বাংলাদেশ পোস্ট অফিস ও Third Wave এর Joint Venture হিসেবে ব্যবসা করলেও এখনো বাংলাদেশ ব্যাংকের MFS guideline এর অধীনে অপারেট করার লাইসেন্স পায়নি নগদ। প্রতিষ্ঠার এক বছর পর গত এপ্রিল মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ছয় মাসের জন্য একটি NOC পায় কোম্পানিটি। ফুল-ফ্লেজড লাইসেন্স পাওয়ার আগ পর্যন্ত এই Interim license দিয়ে অপারেট করছে নগদ। এই NOC এর মেয়াদ আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তারপরে নগদ বর্তমান জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানির পরিবর্তে বাংলাদেশ পোস্ট অফিসের সাবসিডিয়ারি হিসেবে অপারেট করবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের MFS Guideline মেনে কাজ করবে। 

ক্যাশ ইন ক্যাশ আউট লিমিটসহ আরো বিভিন্ন ক্ষেত্রে নগদ অন্যান্য MFS provider দের তুলনায় শুরুতে কিছুটা Flexibility পেয়েছিল যা কোম্পানিটির দ্রুত কাস্টমার acquisition এ ভূমিকা রেখেছিল। তবে পরবর্তীতে নগদও ট্রান্সেকশন লিমিট কমিয়ে অন্যান্য MFS provider মত অফার করছে। এছাড়াও MFS guideline-এর আওতাধীন না থাকার কারণে নগদকে ডেইলি ট্রান্সেকশন বা সেটেলমেন্ট ডাটা প্রকাশ করতে হয়না।

 
Nagad Success Factors

কোন MFS Provider company সাক্সেসফুল কিনা এটা নির্ণয় করার জন্য আমরা কিছু ফ্যাক্টর বোঝার চেষ্টা করেছি। চলুন কোথায় নগদ সফল এবং কোথায় নগদ আরো কাজ করতে পারে দেখে আসা যাক -
 
a) First Mover Advantage: বাংলাদেশে প্রথম MFS provider হিসেবে কাজ করা শুরু করে ডাচ বাংলা ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি কোম্পানি রকেট। তার পরে আসে বিকাশ। পক্ষান্তরে নগদের আবির্ভাব গত দশকের শেষে। কোম্পানিটির পক্ষে ফার্স্ট মুভার এডভান্টেজ পাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু এটার ট্রেডঅফ হিসেবে নগদ যা পেয়েছে সেটাকেও ইগনোর করা যাবেনা। রকেট, বিকাশ যখন তাদের কার্যক্রম শুরু করে তখন MFS ইকোসিস্টেম বলে কিছু ছিলোনা। রকেট, বিকাশসহ অন্যান্য MFS কোম্পানিগুলোকে ইকোসিস্টেম তৈরি করতে হয়েছে, কাস্টমারকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জানাতে, বুঝাতে হয়েছে, কাস্টমার acquisition-এ অনেক সময় এবং অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে। সেই সাথে সময়ের সাথে সাথে নিজেদের প্রোডাক্ট, সার্ভিস ও বিজনেস মডেলে পরিবর্তন আনতে হয়েছে। তাছাড়া অন্যান্য কিছু এস্পেক্ট যেমন সেসময় মোবাইল ইন্টারনেট penetration কম ছিল, ইকমার্স সেক্টর ছিল শুরুর পর্যায়ে এবং অনলাইন পেমেন্ট ইকোসিস্টেমও প্রস্তত ছিলোনা। ২০১৮-২০১৯ সালে ইন্ডাস্ট্রিতে এসে নগদ অনেক পরিণত মার্কেট ও ইকোসিস্টেম পেয়েছে যেটার বেনিফিট তারা দ্রুত কাস্টমার acquisition, বিভিন্ন ইউনিক প্রোডাক্ট introduction ইত্যাদির মাধ্যমে নিতে পেরেছে।

b) Competitive pricing: এপের মাধ্যমে ১১.৪৯ টাকায় ক্যাশআউটের সুবিধা দিচ্ছে নগদ। এছাড়াও এপের মাধ্যমে "Send Money" এর ক্ষেত্রে কোন টাকা চার্জ করেনা নগদ। দ্রুত কাস্টমার বাড়াতে এই ধরণের pricing model নগদকে এগিয়ে রেখেছে।

c) Unique/Personalized Service: নগদের ইউনিক প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের মধ্যে digital KYC, মোবাইল অপারেটরদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে কম সময়ে একাউন্ট ওপেনিং, MFS account ছাড়া টাকা পাঠানো, Digital Qurbani Haat ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও দেশের প্রথম Neobank দৌড়ে ব্যাংক এশিয়ার সাথে আছে নগদও।
 
d) Operating efficiency: digital KYC, NID-এর ছবি, সেলফির মাধ্যমে একাউন্ট ওপেনিং, শুধুমাত্র মোবাইল নং দিয়ে সবচেয়ে কম সময়ে এবং ঝামেলামুক্তভাবে MFS registration প্রথমে নগদই করেছে এবং পরবর্তীতে অন্য প্লেয়াররা সেটাকে ফলো করেছে। এক্ষেত্রে অজপাড়াগায়ে, বিশেষ করে যেসব জায়গায় মোবাইল ইন্টারনেট সুবিধা কম সেসব জায়গায় financial inclusion দ্রুততর হয়েছে।
 
e) Agent Network: দ্রুততম গতিতে কাস্টমার acquire করলেও এজেন্ট নম্বরের দিক দিয়ে বেশ পিছিয়ে আছে নগদ। যদিও নগদ তার এজেন্ট সংখ্যা প্রকাশ করেনা, ইন্ডাস্ট্রির অন্য দুই বড় প্লেয়ার বিকাশ (২৩০,৯৪৪) ও রকেটের (২৬৩,৯৬০) এজেন্ট সংখ্যার তুলনায় তা বেশ কম হবে। তবে mfs sector এ নগদ আসার দুই বছরও পার হয়নি। এক্ষেত্রে এজেন্ট সংখ্যা বাড়ানো এবং এফিসিয়েন্ট করার ক্ষেত্রে নগদের আরো কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
 
f) Strategic Partnership: বিভিন্ন দেশী ও মাল্টিন্যাশনাল কনগ্লোমারেট, ইকমার্স, কুরিয়ার সার্ভিস প্রোভাইডার , ব্যাংক, insurance, Utility  ইত্যাদি অনেক কোম্পানির সাথে পার্টনারশীপের মাধ্যমে চুক্তিবদ্ধ হয়ে গ্রাহকদের এপের মাধ্যমে বিভিন্ন সার্ভিস দিয়ে আসছে নগদ। এক্ষেত্রে অনলাইন ফুড ডেলিভারি, রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলোর সাথে চুক্তিবদ্ধ হওয়া এবং মুভি দেখা, ভ্রমণের টিকেট এপের মাধ্যমে কাটার ব্যবস্থা করাসহ আরো কিছু ক্ষেত্রে নগদ কাজ করতে পারে।
 
g) Data and Information: mfs provider হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকে লিস্টেড না থাকার কারণে daily transaction, customer number, transaction settlement data প্রকাশ করতে হয়না। তবে ২০২১ সালের মার্চের পর পোস্ট অফিসের সাবসিডিয়ারি হিসেবে অপারেট করা শুরু করলে এবং bangladesh bank থেকে লাইসেন্স পেলে এসব তথ্য নিয়মিত প্রকাশ করতে হবে নগদকে। সংবাদপত্র সহ অন্যান্য ইলেক্ট্রনিকে মাধ্যমে মাঝে মধ্যেই নগদ বিভিন্ন তথ্য ও ডাটা শেয়ার করে। এসব তথ্য নিয়মিত প্রকাশ করলে নগদ সমপর্কে গ্রাহকদের ধারণা আরো ভাল হবে। 

h) Brand Value: ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়ানর জন্য নগদ বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। জনপ্রিয় অভিনেতা জাহিদ হাসান ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার মাধ্যমে প্রোডাক্ট প্রমোশন তার কিছু উদাহরণ।

i) Tech Infusion: মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সেক্টরে টেকনলজি ইনফিউশনের ব্যাপারে কিছু ক্ষেত্রে মার্কেট লিডার বিকাশকে ফলো করে আসছে নগদ। ডিজিটাল KYC, biometric registration ইত্যাদি সবার আগে আনলেও অ্যাপে বিভিন্ন সার্ভিস ইন্টিগ্রেশনের ক্ষেত্রে বিকাশকে অনুসরণ করেছে কোম্পানিটি। এক্ষেত্রে একটি পরিপূর্ণ FinTech কোম্পানি হিসেবে establish করার ব্যাপারে কিছুটা ভিন্ন ভিশনে কাজ করছে নগদ। বিকাশ যেমন কাজ করছে একটি সুপার অ্যাপ বানানোর, নগদের লক্ষ্য হচ্ছে অ্যাপে বেসিক সার্ভিসগুলো দেয়ার মাধ্যমে কাস্টমার ধরে রাখা এবং Neobank model-কে establish করা। 

j) Funding Access: বিল গেইটস, Ant Group এর মত globally renowned investor পেয়েছে বিকাশ সেখানে foreign fundraising এর ক্ষেত্রে আরো কাজ করতে হবে নগদকে।

 
Conclusion
 
ডিজিটাল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডার কোম্পানিগুলো personal ও বিজনেস finance এবং financial decision making এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। নগদ তাদের ভিশন অনুযায়ী আগালে আমাদের গরীব জনগোষ্ঠী দেশের ফাইনান্সিয়াল এসেট জেনারেশনে অবদান রাখতে পারবে। এক্ষেত্রে strong ও efficient agent network establish করা এবং নিজেদের ব্র্যান্ডভ্যালু আরো উন্নত করার পাশাপাশি ফরেইন ফান্ডরেইজিং এর ক্ষেত্রে কাজ করতে পারে নগদ।


References:

  1. https://www.thedailystar.net/business/news/2010-2019-meaningful-decade-digital-financial-service-evolution-1908689
  2. https://theincap.com/a-meaningful-decade-for-digital-financial-services-dfs-evolution-in-bangladesh/
  3. https://www.dhakatribune.com/bangladesh/dhaka/2019/03/26/pm-opens-digital-financial-service-nagad
  4. https://en.prothomalo.com/business/Postal-Cash-Card-to-be-integrated-with-Visa
  5. https://www.banglanews24.com/english/national/news/bd/71490.details
  6. https://futurestartup.com/2018/11/03/nagad-goes-all-in-postal-division-initiates-nationwide-branch-inclusion-for-nagad/
  7. https://tbsnews.net/companies/nagad-outstrips-rocket
  8. https://tbsnews.net/economy/banking/interoperability-needed-break-monopoly-mfs-market-123337
  9. https://assetsds.cdnedge.bluemix.net/business/news/nagad-make-mfs-account-opening-faster-grameenphone-users-1961397
  10. https://tbsnews.net/economy/banking/nagad-looks-turn-digital-bank-123334
  11. https://nagad.com.bd/service/cash-out/ 
  12. http://m.thedailynewnation.com/news/268151/nagad-to-be-made-postal-subsidiary-company-from-march-2021
  13. https://www.thedailystar.net/business/news/mfs-limits-jacked-1746178
  14. https://www.thedailystar.net/business/news/nagad-make-mfs-sector-lopsided-1650133
  15. https://www.daily-sun.com/post/485768/Nagad-reducestransaction-limit-
  16. https://oltnews.com/new-mobile-money-business-in-bangladesh-receives-special-treatment
  17. https://www.newagebd.net/article/96814/nagad-robi-sign-deal-on-financial-inclusion
  18. https://tbsnews.net/economy/banking/dnccs-digital-haat-nagad-comes-payment-solutions-110344
  19. https://www.thedailystar.net/lifestyle/news/stress-free-digital-lifestyle-nagad-1999821
  20. https://www.thedailystar.net/opinion/finance/news/breaking-new-ground-why-bangladesh-should-adopt-digital-financial-services-1694377

 

 

 




ক্লাউড কিচেন কি এবং কিভাবে কাজ করে - How Cloud Kitchen Works

গ্লোবাল বিজনেস ডেটা প্ল্যাটফর্ম statista-র প্রজেকশন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে পুরো বিশ্বের অনলাইন ফুড ডেলিভারি ইন্ডাস্ট্রির মার্কেট সাইজ দাঁড়াবে প্রায় দুই লক্ষ মিলিয়ন ডলার। এখন একটি কিচেন মডেলের কথা চিন্তা করা যাক যেটি এই বিশাল মার্কেটকে টার্গেট করে গড়ে উঠেছে। হ্যাঁ, বলা হচ্ছে ক্লাউড কিচেনের কথা; Ghost Kitchen বা Dark Kitchen নামেও এটি পরিচিত।


WHAT IS CLOUD KITCHEN

ক্লাউড কিচেনের অস্তিত্ব থাকে শুধু অনলাইনে; ট্রেডিশনাল রেস্টুরেন্টের মত এটার কোন স্টোরফ্রন্ট থাকেনা যেখানে মানুষজন গিয়ে দাঁড়িয়ে বা বসে খেতে পারে। অর্থাৎ ক্লাউড কিচেন বেসিক্যালি একটি ভার্চুয়াল কিচেন। যেকোন বাসায়ও ক্লাউড কিচেন গড়ে উঠতে পারে আবার আলাদা কিচেন হাউজও হতে পারে। অ্যাপ, ওয়েবসাইট বা কল করেও খাবারের অর্ডার করা যায়, এবং নির্ধারিত সময় পর খাবার কাস্টমারের কাছে পৌঁছে যায়।

Source: POsist

BRIEF HISTORY

শুনতে নতুন মনে হলেও ক্লাউড কিচেন কনসেপ্ট বেশ পুরোনো। পিৎজা ডেলিভারি রেস্টুরেন্টগুলো কয়েক দশক আগে থেকেই কাছাকাছি মডেল ফলো করে ব্যবসা করছে। আরো স্পেসিফিক্যালি বললে পিৎজা টেইকআউট সিস্টেম '৫০ সাল থেকেই প্রচলিত। বর্তমান ক্লাউড কিচেন মডেলের প্র্যাক্টিস শুরু হয়েছিল গত দশকের (২০১০-২০১৯) শুরু থেকে। উপমহাদেশে এর চল শুরু হয় ভারতে, দেশটির সর্ববৃহৎ ক্লাউড কিচেন চেইন Rebel Foods এর হাত ধরে। সুস্বাদু খাবারের চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি পরিপূর্ণ রেস্টুরেন্ট সেপ্স -এর রেন্ট বাড়ার ফলে মেগাসিটিগুলোতে ধীরে ধীরে ক্লাউড কিচেনের সংখ্যা বাড়ছিল। নর্থ আমেরিকাতে প্রথম ক্লাউড কিচেন ব্যবসা শুরু করে গ্রিন সামিট গ্রুপ। নিউইয়র্ক-ভিত্তিক এই ব্যবসা শুরু হয় ২০১৩ সালে। 


CLOUD KITCHEN MODELS

মোটামুটি ৬ ধরণের ক্লাউড কিচেন মডেল দেখা যায়। চলুন তাদের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক -

1) Independent Cloud Kitchen - Single Brand, Single Kitchen, No Storefront

এটাকেই অরিজিনাল ক্লাউড কিচেন মডেল বলা হয়। এক্ষেত্রে কোন ডাইনিং স্পেস থাকেনা, থাকেনা কোন ফিজিকাল স্টোরও। তাই সহজেই বড় ধরণের Overhead Cost বাঁচানো সম্ভব হয়। শুধুমাত্র Back of the House (BOH) কার্যক্রম চালানো অর্থাৎ রান্নার ক্ষেত্রেই কিচেন স্পেস ব্যবহৃত হয় এবং কিচেন সাইজও ৫০০-৬০০ স্কয়ার ফিটের বেশি হয়না। রেস্টুরেন্ট টেকনলজির প্রসার ও অনলাইন অর্ডারিং এর পপুলারিটির কারণে এই ক্লাউড কিচেন মডেলটি বেশ জনপ্রিয় ।

Independent Cloud Kitchen-গুলো সাধারণত single cuisine করে থাকে। এই ধরণের রেস্টুরেন্টগুলোতে খুবই সিম্পল অনলাইন অর্ডারিং সিস্টেম বা হটলাইন থাকে যেখানে কাস্টমাররা অর্ডার প্লেস করে এবং নির্দিষ্ট সময় পর খাবার ডেলিভারি দেয়া হয়।

2) Multi-brand Cloud Kitchen - Multi Cuisine, Single Kitchen, Multiple Outlets, No Storefront

বিখ্যাত অনলাইন রেস্টুরেন্ট কোম্পানি Rebel Foods-এর অধীনে থাকা অন্যতম অন-ডিমান্ড ফুড সার্ভিস প্রোভাইডার ব্র্যান্ড, Faaso's এই মডেল ফলো করে ২০১১ সালে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছিল। এই ধরণের ক্লাউড কিচেন একের বেশী ব্র্যান্ড প্রমোট করে থাকে। এক্ষেত্রেও কোন স্টোরফ্রন্ট থাকেনা তবে মাল্টিপল আউটলেট থাকে। 

মূলত ডাটা-ড্রিভেন এই কিচেন মডেলটি কাস্টমার ডেমোগ্রাফি, এলাকাভিত্তিক ফুড সাপ্লাই-ডিমান্ড সিনারিও, কোন Cuisine বেশি পপুলার ইত্যাদি এনালাইসিসের মাধ্যমে অপারেট করে। এই ধরণের কিচেন মডেলে খুব দ্রুত ট্র্যাকশন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিজেদের স্ট্র্যাটেজিক পজিশনিংও স্ট্রং হয়।

3) Hybrid Cloud Kitchen - Single Brand, Single Kitchen, Multiple Outlets, with a Storefront

ক্লাউড কিচেন মডেলের সব ধরণের সুবিধা পাওয়ার পাশাপাশি স্টোরফ্রন্ট থাকার কারণে কাস্টমারদের জন্য রেস্টুরেন্টে এসে, মেন্যু দেখে টেকএওয়েরও ব্যবস্থা থাকে এখানে। এক্ষেত্রে কিচেন সাইজ কিছুটা বড় হয়। টিপিকাল হাইব্রিড ক্লাউড কিচেনের সাইজ ১০০০-১২০০ স্কয়ার ফিটের মত হয়। ভারতের অ্যাপভিত্তিক ফুড-টেক স্টার্টআপ FreshMenu এই মডেল ফলো করে।

4) "SHELL" Cloud Kitchen - Aggregator-owned, Multi Brand, rented co-working Kitchen, no Storefront

"Shell" নামকরণের কারণ হল, এই ধরণের মডেলে মিনিমাম ইনফ্রাস্ট্রাকচার যেমন গ্যাসলাইন, ড্রেইনেজ, এবং ভেন্টিলেশন দিয়ে তৈরি কিচেন স্পেস থাকে। প্রতিষ্ঠিত ফুড-ব্র্যান্ড বা ফুড-এগ্রিগেটর গুলো এসব কিচেন স্পেস ভাড়া নেয়ার মাধ্যমে এই ধরণের মডেলে অপারেট করে। ভারতের লার্জেস্ট ও হাইয়েস্ট-ভ্যালুড অনলাইন ফুড অর্ডারিং ও ডেলিভারি প্ল্যাটফর্ম Swiggy এই মডেল ফলো করে।

5) Fully Stacked Cloud Kitchen - Aggregator-owned, Multi Brand, rented co-working Kitchen, with a Storefront

Shell Model এর সাথে এই কিচেনের পার্থক্য শুধু একটাই - এটাই স্টোরফ্রন্ট থাকে। Shell মডেলের মত এক্ষেত্রেও একটা বড় কিচেন রেখে ছোট ছোট স্পেস ভাড়া দিয়ে মাল্টিপল ব্র্যান্ডের সাথে পার্টনারশীপ করা থাকে। ভারতীয় ফুড ডেলিভারি স্টার্টআপ Zomato এই মডেল ফলো করে।

6) Fully Outsourced Cloud Kitchen

এই মডেলে কুকিং ও ফুড ডেলিভারি থার্ড পার্টি প্রোভাইডারের মাধ্যমে আউটসোর্স করা হয়। এক্ষেত্রে একটি কল সেন্টারের মাধ্যমে অর্ডার ম্যানেজমেন্ট করা হয়। বিভিন্ন জায়গা থেকে রান্না করা খাবার সেন্ট্রাল কিচেনে ফাইনাল টাচের জন্য আনা হয় তারপর কাস্টমারের কাছে ডেলিভারি দেয়া হয়। দুবাই-ভিত্তিক Kitopi এই ধরণের একটি ক্লাউড কিচেন মডেল ফলো করে যেখানে ইনভেন্টরি ও স্টোরেজ তারাই দেখাশুনা করে; খাবার প্রস্তুত করার পর সেন্ট্রাল কিচেনে পাঠিয়ে দেয়। পরে সেন্ট্রাল কিচেন থেকে কাস্টমারের কাছে ডেলিভারি দেয়া হয়।


HOW CLOUD KITCHEN WORKS

যেহেতু অনলাইনেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে খাবারে অর্ডার নেয়া হয়, প্রায় সব কিচেনেই Cloud Kitchen POS থাকে। বিভিন্ন ফুড এগ্রিগেটর, ওয়েব প্ল্যাটফর্ম বা ফোন কলের মাধ্যমে আসা অর্ডারকে এই POS-গুলোর সাহায্যে একত্রিত করা হয়। এছাড়াও ফোন কলের মাধ্যমে পাওয়া অর্ডারগুলোকে সঠিক ব্র্যান্ডের কাছে রাউটিং-এর জন্য একটি কল সেন্টার প্যানেল এর দরকার হয়।

অন্য রেস্টুরেন্টের অর্ডার প্রসেসিং-এর সাথে ক্লাউড কিচেনের অর্ডার প্রসেসিং-এর পার্থক্য হল বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অর্ডারগুলো বিভিন্ন ব্র্যান্ডের হয় এবং তাদের টেইস্ট ও প্যাকেজিং আলাদা হয়। এক্ষেত্রে একেক ব্র্যান্ডের জন্য ডেডিকেটেড শেফ ও কিচেন এরিয়া থাকে। এছাড়াও কোন কোন ক্লাউড কিচেন Kitchen Display System এর ব্যবস্থা করে। অর্ডার পাওয়ার সাথে সাথে ঐ display system -এ সেই অর্ডারের যাবতীয় তথ্য দেখা যায়। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের খাবার প্রস্তুতের জন্য নিয়োজিত শেফ ও অন্যান্য স্টাফরা সহজেই এসব তথ্য দেখতে পায়। খাবার প্রস্তুতির পর ডেলিভারি স্টেশনে ঐ খাবারের ব্র্যান্ডের সাথে রিলেটেড প্যাকেজিং-এর কাজ শেষ করা হয়।

Cloud kitchen এর সাপ্লায়ার ম্যানেজমেন্ট কমার্শিয়াল রেস্টুরেন্টের চেয়ে খুব বেশি ভিন্ন না। বেশিরভাগ ব্র্যান্ডই তাদের খাবার প্রস্তুতির ক্ষেত্রে কিছু basic ingredient রাখে সাথে ওই ব্র্যান্ডের designated কিছু ingredient থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ক্লাউড রেস্টুরেন্টগুলোকে মাল্টি-সাপ্লায়ার মডেল ফলো করতে দেখা যায়। এক্ষেত্রে বেসিক ইনগ্রিডিয়েন্টগুলো এক সাপ্লায়ার থেকে এবং বাকি ইনগ্রিডিয়েন্টগুলো ভিন্ন ভিন্ন সাপ্লায়ার থেকে নেয়া হয়। 

ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট ক্লাউড কিচেনের ক্ষেত্রে একটু জটিল। কয়েকটি ব্র্যান্ডের ইনভেন্টরি ম্যানেজ করতে হয় বলে ব্যাপারটা কিছুটা হ্যাপার হয়, কিন্তু এক্ষেত্রে স্টার্টআপগুলো টেক-বেইজড ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে এক্ষেত্রে সুবিধা পেয়ে থাকে।

ওয়েবসাইট বা সোশ্যাল মিডিয়া পেইজ নেই এমন ক্লাউড কিচেন নেই বললেই চলে। নিজ নিজ ওয়েবপেইজ এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে কিচেনগুলো এবং তাদের সাথে থাকা ফুড এগ্রিগেটরগুলো তাদের খাবারের বিভিন্ন আপডেট ও অফারের ঘোষণা দেয় এবং এসব আপডেট ও অফার সম্পর্কে কাস্টমারদের ফিডব্যাক নেয়। এছাড়াও অনেক ক্লাউড রেস্টুরেন্টই ডিরেক্ট কম্পিটিটর না এমন রেস্টুরেন্টের সাথে স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশীপে যায় যার ফলে ব্র্যান্ডিং সহজ হয়। এসএমএস মার্কেটিং এবং ইমেইল মার্কেটিং বেশ পুরোনো হলেও যেকোন অফার সম্পর্কে দ্রুত জানানোর জন্য এই দুটো পদ্ধতি এখনো প্রচলিত।


PROS OF CLOUD KITCHEN

Hybrid ও Fully stacked cloud kitchen ছাড়া অন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্টোরফ্রন্ট না থাকার কারণে কাস্টমারকে বসে খাওয়ানোর দরকার পড়েনা। ফলে বড় ধরণের Overhead cost বেচে যায়। মেনু প্রয়োজনমত বারবার পরিবর্তন করা যায়, আবার পরিবর্তিত মেন্যু বারবার প্রিন্টেরও দরকার পড়েনা; ওয়েব প্ল্যাটফর্মে আপডেট করে দিলেই হয়। এছাড়া একের বেশী ফুড এগ্রিগেটরের সাথে পার্টনারশীপ থাকার কারণে অনেক অর্ডার নেয়ার মাধ্যমে দ্রুত বিজনেস এক্সপানশনের সুযোগ থাকে।

নামীদামী রেস্টুরেন্টগুলোর শহরের কেন্দ্রীয় জায়গাগুলোতে থাকার প্রয়োজন পড়ে। ক্লাউড কিচেনগুলোতে এই ঝামেলা নেই। শহরের যেকোন জায়গায় স্থাপনার কারণে সহজে কাস্টমারের কাছে পৌঁছানোও সম্ভব হয়। এর সাথে রয়েছে ডাটা ড্রিভেন ইনসাইটের মাধ্যমে বিজনেস স্ট্র্যাটেজি সাজানোর সুবিধা।


CONS OF CLOUD KITCHEN

ডেলিভারির ক্ষেত্রে অনেক বেশী সতর্কতার প্রয়োজন পড়ে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের জন্য আলাদা প্যাকেজিংয়ের দরকার পড়ে। সঠিক প্যাকেজিং না হওয়ার দরুন খাবার নস্ট হওয়ার ঝুকিতো আছেই। এছাড়াও অনলাইন রেপুটেশনের দিকে খ্যেয়াল রাখতে হয় বেশি। ভার্চুয়াল কিচেন হওয়ার কারণে এর রেপুটেশনও অনলাইনভিত্তিক। কাস্টমারদের যেকোন খারাপ রিভিউ এবং লো রেটিং ফুড প্রোভাইডারদের রেপুটেশন খারাপ করে ।

অনেক ক্লাউড কিচেনই ডেলিভারির জন্য থার্ড পার্টির উপর নির্ভরশীল থাকে। এক্ষেত্রে ডেলিভারির উপর নিয়ন্ত্রণ না থাকলে যেকোন খারাপ অভিজ্ঞতার কারণে কাস্টমারের ব্যাড রিভিউর ঝুকি থাকে।


CLOUD KITCHEN AND BANGLADESH

বাংলাদেশে ক্লাউড কিচেন বিজনেস শুরু হয় ফুড-টেক স্টার্টআপ Kludio-র হাত ধরে। ২০১৯ সালে ক্লাউড কিচেন বিজনেস শুরু করে Kludio। শুধু ফার্স্ট মুভারই নয়, Kludio দেশের প্রথম Full-stacked Cloud Kitchenও। খাবারের কোয়ালিটি মেইন্টেইনের পাশাপাশি সুপিরিয়র স্টোরেজ সিস্টেম, টেম্পারেচার রেগুলেশনে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তির ব্যবহারের পাশাপাশি ফাস্টার ডেলিভারির দিকে ফোকাস করছে স্টার্টআপটি। এখন পর্যন্ত তারা ৪টি ভিন্ন ব্র্যান্ড এনেছে - Dough on the Go, Hero Burger, Frybox, এবং Deshio। এছাড়াও ভারতীয় ক্লাউড কিচেন কোম্পানি Ghost Kitchens, Kludio-র সাথে একটি জয়েন্ট ভেঞ্চার পার্টনারশীপ সম্পন্ন করেছে যার মাধ্যমে নলেজ ও ইনফ্রাস্ট্রাকচার শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন operational cost কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে। এছাড়াও সম্প্রতি ফরেন ফান্ডও রেইজ করেছে স্টার্টআপটি। 

Kludio-র দেখাদেখি অন্যান্য ফুড প্রোভাইডারও ক্লাউড কিচেন বিজনেস শুরু করেছে। ফুডপান্ডা কয়েক মাস আগে একটি সার্ভিস শুরু করে যেখানে যেকেউ রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে নিজেদের তৈরিকৃত খাবার বিক্রি করতে পারবে। শুধু ক্লাউড কিচেন সার্ভিস দেয় এমন প্ল্যাটফর্মগুলোর একটি হল Live Green BD। গত বছরের সেপ্টেম্বরে তারা কার্যক্রম শুরু করে। এখন পর্যন্ত তারা পাঁচটি ব্র্যান্ড launch করেছে। ব্র্যান্ডগুলো হচ্ছে  TenR, SMARTMEAL, House of Shen, Lean On, এবং Wrapper।

বাংলাদেশী ক্লাউড কিচেন সার্ভিস প্রোভাইডাররা মূলত ফ্রেশ ও সেইফ ফুড সরবরাহের দিকে জোর দিচ্ছে। দেশী ক্লাউড কিচেন ল্যান্ডস্কেইপে বেকিং আইটেমগুলোও বেশ জনপ্রিয়। Mahjabeen’s bakery, sweet daisy, swapno ferry, prothoma kitchen, Joya’s bake n joy, Punniz kitchen - ইত্যাদি বেশ পরিচিতি পেয়েছে।


CONCLUSION

ক্লাউড কিচেন সিস্টেমকে রেস্টুরেন্ট বিজনেসের ভবিষ্যৎ বলছেন বিজনেস এক্সপার্টরা। করোনাভাইরাস মহামারীর সময়ে ক্লাউড কিচেন মার্কেটের প্রবৃদ্ধি কয়েকগুণ বেড়েছে। এই মার্কেটকে কেন্দ্র করে নতুন নতুন বিজনেস মডেল গড়ে উঠছে এবং পুরো ফুড-টেক ইকোসিস্টেমে বিদেশী বিনিয়োগ আনা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে দেশের জিডিপি গ্রোথে বড় অবদান রাখার পথে এগিয়ে যাচ্ছে ক্লাউড কিচেন বিজনেস


REFERENCE

  1. Online Food Delivery - worldwide | Statista Market Forecast
  2. Behind the scenes at FreshMenu – how the Indian foodtech startup serves up 12,000 orders a day (yourstory.com)
  3. About | Kitopi
  4. Cloud Kitchen Models You Should Know And Invest In | Taker
  5. The 6 Cloud Kitchen Business Models and How They Work (limetray.com)
  6. CloudKitchens: How it Works - YouTube
  7. Cloud Kitchens | Toptal
  8. Decoding The Cloud Kitchen Model: Myths And Truths About Cloud Kitchen (posist.com)
  9. Opening a Ghost Restaurant? All the Pros and Cons (upserve.com)
  10. Cloud Kitchens: Future of food delivery services | The Daily Star
  11. Ghost Kitchens forms JV with Bangladesh-based food tech start-up, Hospitality News, ET HospitalityWorld (indiatimes.com)
  12. TendR Menu (livegreenbd.com)
  13. Cloud Kitchen Business In Bangladesh: The Next Big Opportunity? | Upstarters
  14. Smartmeal: A Smart Solution For A Healthy Life-453711 (daily-sun.com)
  15. New food platform promises deshi caviar, healthy recipes and more | Dhaka Tribune
  16. Dhaka's first full-stack digital food court Kludio shines despite COVID-19 | e27
  17. Kludio, Full-stack Cloud Kitchen, and the Business of Aggregation - Future Startup