Tuesday, January 26, 2021

Rise and Fall of Keya Cosmetics

 
টিভি, রেডিওতে প্রচারিত ৯০ এর দশকের বিজ্ঞাপনগুলো আমাদের এখনো মনে আছে। আর সেই সময়ে টিভিসিই ছিল  প্রোডাক্ট প্রমোশনের প্রধান মাধ্যম। কোম্পানিগুলোও অনেক আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপণ প্রচার করতো। আর সেসব বিজ্ঞাপণের তালিকা তৈরি করলে কেয়া কসমেটিক্সের বিজ্ঞাপণগুলো প্রথম দিকেই থাকবে। সেই সময় কসমেটিক্স ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে কেয়া কসমেটিকস এর পণ্যগুলো বেশ জনপ্রিয় ছিল। নারিকেল তেল, বিউটি সোপ, লিপজেলসহ বিভিন্ন কসমেটিকস পণ্য বিক্রির পাশাপাশি আকর্ষণীয় জিংগেলের বিজ্ঞাপণ প্রচারের মাধ্যমে কোম্পানিটি শক্তিশালী মিডিয়া পজিশন অর্জন করে এবং কম সময়ের মধ্যেই ১৫% এর বেশি মার্কেট শেয়ার দখল করে ফেলে। কিন্তু পরবর্তীতে কোম্পানিটির মালিকপক্ষ গার্মেন্টস ব্যবসার দিকে ঝুঁকে পড়লে তাদের মূল কসমেটিকস বিজনেস থেকে ফোকাস সরে যায়। ফলশ্রুতিতে অর্জিত মার্কেট শেয়ার হারিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে কোম্পানিটি।
 
Cosmetics & Toiletries Industry

শুরুতে সংক্ষেপে কসমেটিক্স এন্ড টয়লেট্রিজ সেক্টরটি নিয়ে কিছু বলা যাক। ২০১৫ সালে এই সেক্টরের টার্নওভার ছিল ১৫০ বিলিয়ন টাকা যা তখনকার জিডিপির প্রায় ১%। ১২% এর বেশি প্রবৃদ্ধির এই সেক্টরে দেশী কোম্পানিগুলোর ডমিনেন্স বেশী। মার্কেট শেয়ারের দিকে থেকে টপ প্লেয়ারগুলোর মধ্যে ইউনিলিভার বাংলাদেশ, কোহিনূর, স্কয়ার, কাশেম গ্রুপ, কল্লোল গ্রুপ, মৌসুমী ইন্ডাস্ট্রিজ এবং ডেল্টা গ্রুপ উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে এই সেক্টরের টার্নওভার ৩.২ বিলিয়ন ডলার বা ২৭০ বিলিয়ন টাকা বলে ধারণা করা হয়। 

বিজ্ঞাপণভিত্তিক প্রমোশনের উপর নির্ভরশীল হওয়ার কারণে কসমেটিক্স এন্ড টয়লেট্রিজ কোম্পানিগুলোর অপারেটিং এক্সপেন্সের একটা বড় অংশ পণ্যের প্রমোশনের জন্য বরাদ্দ রাখতে হয়। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের একটি রিপোর্টে দেখানো হয়, ad share % এর দিক থেকে ১১% শেয়ার নিয়ে টেলিকম সেক্টরের সাথে যুগ্মভাবে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল কসমেটিক্স এন্ড টয়লেট্রিজ সেক্টর। আগে কসমেটিক্স কোম্পানিগুলো টিভি বিজ্ঞাপণ ও সেলিব্রিটি এন্ডরসমেন্টের উপর বেশী নির্ভরশীল থাকলেও বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইভেন্ট এরেঞ্জমেন্ট কসমেটিক্স কোম্পানিগুলোর প্রমোশনের উল্লেখযোগ্য অংশ দখল করেছে।

Source: BBF
 
History of Keya
 
কোম্পানির বর্তমান চেয়ারম্যান মিঃ আব্দুল খালেক পাঠান ১৯৮৩ সালে খালেক এন্ড কোং নামের একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন এবং ইটের ব্যবসা শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি সাবানের ব্যবসার দিকে ঝুঁকে্ন, এবং ১৯৯৬ সালে ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে গাজীপুরের জারুনে একটি ফ্যাক্টরি প্রতিষ্ঠা করেন। একই বছর খালেক এন্ড কোং এর সিস্টার কন্সার্ন হিসেবে কেয়া কসমেটিক্সের যাত্রা শুরু হয় এবং পরের বছরে বিউটি সোপ প্রোডাকশনের মাধ্যমে কোম্পানিটি কমার্শিয়াল অপারেশন শুরু করে। পরবর্তীতে মূল কোম্পানি খালেক এন্ড কোং এর নাম পরিবর্তিত হয়ে হয় কেয়া গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজ। ১৯৯৯ সালে কেয়া কসমেটিক্স পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে লিস্টেড হয় এবং ২০০১ সালে শেয়ারবাজারে অন্তর্ভুক্ত হয়। 
 
Rise & Expansion

শুরুর দিকে কেয়ার পোর্টফোলিওতে মূল প্রোডাক্ট বলতে শুধুমাত্র কেয়া সুপার বিউটি সোপ থাকলেও পরবর্তীতে ধীরে ধীরে বিভিন্ন fragrance, size, color এর আরো বেশ কিছু ভ্যারিয়েন্ট প্রোডাক্ট যোগ করা হয়। এগুলোর মধ্যে কেয়া লেমন বিউটি সোপ, ফেয়ারনেস বিউটি সোপ, স্কিনকেয়ার বিউটি সোপ, হারবাল বিউটি সোপ, বেবী সোপ, বল সাবান, লাইফগার্ড সোপ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও পরবর্তীতে কোম্পানিটি পেট্রোলিয়াম জেলী, লিপজেল, ডিটারজেন্ট পাউডার, শেভিং ক্রিম, শ্যাম্পু ইত্যাদি উৎপাদন শুরু করে। কোম্পানিটির পণ্যগুলোর প্রধান কাঁচামালের মধ্যে রয়েছে Sodium salt, Palm oil,  এবং RBD (Refined, Bleached, & Deodorized) Coco Oil। এসব কাঁচামাল আমদানি করা হয় মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইটালি, ফ্রান্স, জার্মানি ইত্যাদি দেশ থেকে। এছাড়াও Swiss company clariant এবং জার্মান কোম্পানি BASF থেকে কালারিং ম্যাটেরিয়াল আমদানি করে কেয়া। অন্যদিকে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ এবং সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে কেয়ার প্রোডাক্টসমূহ রপ্তানি করা হয়। 
 
প্রতিষ্ঠার পরের দশকের সময়টায় অর্থাৎ ২০০০-২০০৯ সালে কেয়া বাংলাদেশ কসমেটিকস মার্কেটে ভাল অবস্থানে অর্জন করতে সক্ষম হয়। আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপণভিত্তিক মার্কেটিং, এবং দাম তুলনামূলক কম রাখার কারণে কেয়া মোটামুটি মাঝারি মানের মার্কেট শেয়ার অর্জন করতে সক্ষম হয়। ২০১০ সালে কেয়ার মার্কেট শেয়ার ছিল ১৬%। 
 
- Soap portfolio
 
বিভিন্ন fragrance, কালার এবং সাইজের উপর ভিত্তি করে কেয়া তার সোপ পোর্টফোলিও গঠন করেছে। কেয়া লেমন বিউটি সোপকে কেয়ার সবচেয়ে সাকসেস্ফুল ব্র্যান্ড মনে করা হয়। এর পরেই অবস্থান কেয়ার সবচেয়ে পুরোনো ব্র্যান্ড কেয়া সুপার বিউটি সোপ। তিনটি fragrance ও ভিটামিন ই সমৃদ্ধ বিউটি সোপ উতপাদনের মাধ্যমে বিউটি বার সোপ ক্যাটাগরিতে একসময় মার্কেট লিডারদের সাথে পাল্লা দিয়ে ব্যবসা করতো কোম্পানিটি। পরবর্তীতে এই সুপার বিউটি সোপের মিনি ভার্সনও বাজারে আনে কেয়া। এছাড়া হেলথ বার সোপ ক্যাটাগরিতে কেয়া লাইফগার্ড এর কম্পিটিটর ছিল লাইফবয়, স্যাভলন ও ডেটল। পরবর্তীতে বল সাবান এবং গ্লিসারিন লন্ড্রি সোপ উৎপাদনের মাধ্যমে লন্ড্রি সোপ মার্কেটেও প্রবেশ করে কেয়া। ধীরে ধীরে বেবি সোপ, হারবাল বিউটি সোপ ও স্কিনকেয়ার সোপ উতপাদনের মাধ্যমে সোপ ইন্ডাস্ট্রির প্রায় সবগুলো সেগমেন্টে প্রবেশ করেছে কেয়া। অল্প সময়ের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জনের দিক থেকে কেয়া বল সাবানের কথা না বললেই নয়। 
 
সাবানের কাঁচামাল সরবরাহকারী backward linkage company হিসেবে ২০০৪ সালে প্রায় ৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রতিষ্ঠা করা হয় Keya Soap Chemicals Ltd.। এই কোম্পানির ফ্যাক্টরিতে সাবান উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল সোপ ন্যুডলস উৎপাদন করে কেয়া। শুরুতে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে সোপ ন্যুডলস আমদানি করা হত। এসিআই, ইউনিলিভার বাংলাদেশ, রেকিট বেঙ্কাইজার, স্কয়ার টয়লেট্রিজসহ কাছে বিভিন্ন দেশী কোম্পানির কাছে সোপ ন্যুডলস বিক্রি করে কেয়া।
 
 
- Other Products
 
কেয়া কসমেটিক্সের অধীনে ৪টি বিজনেস ইউনিট আছে - ১) কসমেটিকস ডিভিশন ২) Knit Composite Division 3) Spinning Division 4) Cotton Division।  কসমেটিকস ডিভিশনের দুইটি কোম্পানি আছে - Keya Soap Chemicals Ltd. এবং কেয়া ডিটারজেন্ট লিমিটেড। ডিটারজেন্ট পোর্টফোলিওতে আছে লেমন ডিটারজেন্ট, White plus detergent, Super excel detergent এবং Super Jet detergent Powder। 
 
কোম্পানি ম্যানেজমেন্ট  ১৯৯৯ সালে স্পিনিং বিজনেস শুরু করে। তারও পরে ২০০৪ সালে গড়ে তোলা হয় Keya Cotton Mils, ২০০৫ সালে Keya Knit Composite Factory, এবং ২০০৮ সালে Keya Yarn Mills Ltd.। সেইসাথে Spinning Division এর অধীনে Keya Spinning Mills ও গঠন করা হয়। এসব কোম্পানিতে Readymade Garments, Knitted Garments, ও দরকারী কটন উৎপাদিত হয়। ২০১৫ সালে সবগুলো কোম্পানি কেয়া কসমেটিক্সের অধীনে একত্রিত করা হয়।
     


Reasons of Fall

- Entering into Garments Business

২০০০-০৯ দশকে কসমেটিকস মার্কেটে যে সন্তোষজনক অবস্থান অর্জন করেছিলো কেয়া, পরের দশকে কেয়ার সেই অবস্থান ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। কসমেটিক্স ব্যবসায় stability এবং শক্ত অবস্থান পাওয়ার আগেই গার্মেন্টস ব্যবসার মত ক্যাপিটাল ইন্টেন্সিভ ব্যবসাতে ঝুঁকে পড়ার কারণে মূল ব্যবসাতে থেকে ফোকাস সরে যায় কোম্পানিটি। ফলে কসমেটিক্স ব্যবসার অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। ২০১৫ সালে কসমেটিক্স সেক্টরে কোম্পানিটির মার্কেট শেয়ার দাঁড়ায় ৫%। ২০১২-১৩ সালে যেখানে কেয়ার লোকাল সেলস ছিল ২৬০ কোটি, ২০১৭ তে তা প্রায় অর্ধেকে নেমে ১৪০ কোটিতে দাঁড়ায়। 

কসমেটিকস পণ্যের বিপুল চাহিদা থাকা সত্ত্বেও কোম্পানির ম্যানেজমেন্টের কসমেটিক্স বিজনেস এক্সপানশনের জন্য কোন কার্যক্রম চোখে পড়ছেনা। টিবিএসের একটি রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, কর্মী সংকটের দরুণ দুটি প্রোডাকশন ইউনিটে small scale -এ ডিটারজেন্ট ও সাবান উৎপাদন হচ্ছে।

- Becoming a Distressed company

২০০০ সালের দিকে দেশের গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি যেমন বড় হচ্ছিলো, সেইসাথে পণ্যের চাহিদাও ছিল। এই সুযোগটাই কেয়া নিতে চেয়েছিলো এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে কয়েকটি ফ্যাক্টরি নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। এসব ফ্যাক্টরি নিমার্ণ ও অন্যান্য বিনিয়োগ বাবদ অনেক বেশি লোন নিয়ে ফেলে কোম্পানিটি। এছাড়াও ২০১০ সালে গ্লোবাল মার্কেটে কটন প্রাইসের ভলাটিলিটির কারণে কোম্পানিটি উচ্চ দামে কটন কিনে। ফলে production cost বেড়ে যায় এবং আশানুরূপ প্রফিট হয়নি। তার উপর ২০১০-১১ সালে কোম্পানিটির প্রায় ৫০০ কোটি টাকার এক্সপোর্ট অর্ডার ক্যান্সেল হয়ে যায়। মূলত ঐ সময় থেকেই কোম্পানিটি লোন পরিশোধ করতে সমস্যার সম্মুখীন হয়। লোন পরিশোধের জন্য বিভিন্ন ইউনিট মার্জ করা, পুজিবাজারে শেয়ার ইস্যু করাসহ নানা কার্যক্রম করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। ২০১২ সালে কোম্পানিটির মালিকের নাম বিভিন্ন ব্যাংকের ডিফল্টার লিস্টে চলে আসে। সর্বশেষ প্রাপ্ত ২০১৭-২০১৮ annual report এ কেয়া কসমেটিকস এর প্রায় ১৭০০ কোটি টাকার লোন আউটস্ট্যান্ডিং ছিল। ২০১৯ সালের ২৪ জুন প্রকাশিত টপ ৩০০ জন লোন ডিফল্টারের তালিকায় পুজিবাজারের ১০টি কোম্পানির মধ্যে কেয়ার নাম ছিল এবং ডিফল্টেড লোনের পরিমাণ ছিল প্রায় ১০০ কোটি টাকা।  বর্তমানে লোন পরিশোধ স্বাভাবিক রয়েছে বলে বিভিন্ন ব্যাংক সূত্র হতে জানা যায়।  

- Lack of enough segmentation 

গত দশকে কেয়া তাদের প্রোডাক্ট নিয়ে কোন কাজ করেনি। তাদের প্রোডাক্ট ক্যাটাগরি আগেরগুলোই রয়েছে এবং ঐসব ক্যাটাগরিতে আগের প্রোডাক্টগুলোই উৎপাদিত হচ্ছে সীমিৎ আকারে। আগের সেই বল সাবান, ডিটারজেন্ট, শ্যাম্পু, বিউটি সোপ-ই এখনো বিক্রি হচ্ছে তাও কম পরিমাণে। করা হয়নি বয়সভিত্তিক বা লিংগভিত্তিক কোন সেগমেন্টেশনও। বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলো এবং ভাল কসমেটিক্স ব্র্যান্ডগুলি পুরুষ ও মহিলা কেন্দ্রিক পণ্য ম্যানুফ্যাকচার করে unisex product positioning করেছে এবং তাদের মার্কেট শেয়ার বাড়িয়েছে। কেয়ার সেরকম কোন কার্যক্রম দেখা যায়নি।

- Low Share of Voice

কোন কোম্পানির Share of voice হল ঐ কোম্পানির advertising ও marketing / ঐ কোম্পানির সেক্টরের মোট advertising ও marketing। প্রোডাক্ট মার্কেটিং এন্ড প্রমোশনাল ইকোসিস্টেম গত পাঁচ বছরে অনেক পরিবর্তিত হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং একটা বড় অংশ দখল করেছে। আগের সেলিব্রিটি Endorsement-ও এখন অনেক বেশি সোশ্যাল মিডিয়া নির্ভর। এছাড়া traditional TVC, Local ও International event স্পন্সরের মাধ্যমে প্রমোশনতো আছেই। সব মিলিয়ে একটি বা দুইটি মাধ্যমের উপর নির্ভরশীল না হয়ে ৩৬০ ডিগ্রী বা TTL marketing strategy-ই ফলো করছে কোম্পানিগুলো। যেমন লাক্স পুরোনো ও নতুন টিভিসি প্রচারের পাশাপাশি বিভিন্ন ড্রামা সিরিয়ালের টাইটেল স্পন্সরশীপ, লাক্স- চ্যানেল আই সুপারস্টার-এর স্পন্সরশীপ, বিলবোর্ড মার্কেটিং, নিউজপেপার এড - ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের প্রোডাক্ট প্রমোশন করে। এছাড়াও ডেটলের গ্লোবাল হ্যান্ডওয়াশিং ডে উৎযাপন, লাইফবয়ের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে অন্তর্ভুক্তি করার ঘটনা না বললেই নয়। এদিক থেকে আশ্চর্য ব্যতিক্রম কেয়া। কোম্পানিটি সবসময় টিভিসি ভিত্তিক প্রমোশনকে প্রাধান্য দিয়ে এলেও ২০১৬ সালের পর কেয়ার কোন টিভিসি প্রচারিত হয়নি। ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান "ইত্যাদি"র স্পন্সর হিসেবে এখনো কাজ করছে কেয়া, কিন্তু আমরা সবাই জানি জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে ইত্যাদির অবস্থান আজ কোথায়।

- Absence of positioning

প্রতিষ্ঠার বছরগুলোতে সব ধরণের কাস্টমারদেরই টার্গেট করেছিল কেয়া। মফস্বল ও গ্রামের মানুষদের আকৃষ্ট করতে  কম্পিটিটরদের তুলনায় ৬-৭% দাম কমও রাখতো কোম্পানিটি। পরবর্তী সময়ে product positioning ঠিকমত করতে পারেনি কোম্পানিটি। বড় কোম্পানিগুলো যেমন তাদের প্রোডাক্টের সঠিক পজিশনিং-এর মাধ্যমে তাদের প্রাইসিং স্ট্র্যাটেজি ঠিক করেছে, কেয়া সেখানে "Just Another Beauty Soap" হিসেবে মার্কেটে থেকে গেছে। অন্য সোপ ম্যানুফ্যাকচারাররা বিউটি সোপের পাশাপাশি এন্টিএজিং, আয়ুর্বেদিক প্রোডাক্টগুলোতেও সমান ট্র্যাকশন অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। সেখানে কেয়ার রেভিনিউ বিউটি সোপ কেন্দ্রিকই রয়ে গেছে বছরের পর বছর।

- Weak Product Distribution

Product distribution এর ক্ষেত্রে Traditional model-ই follow করে আসছে কেয়া। আর তা হল - Manufacturer >>>> Wholesaler >>> Retailer >> Consumer। অর্থাৎ অন্যান্য কসমেটিক্স কোম্পানিগুলোর মত Intermediary গুলোর উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। আবার ডিমান্ড অনুযায়ী প্রোডাক্টের অপ্রতুলতা, এবং লো মার্জিনের কারণে wholesaler ও রিটেইলারদের কেয়ার প্রোডাক্টের ব্যাপারে আগ্রহ কম। অন্যান্য কম্পানিগুলো তাদের wholesaler ও রিটেইলারদের পর্যাপ্ত ইনসেন্টিভ প্রদানের মাধ্যমে ভাল রিলেশনশীপ মেইন্টেইন করে। এক্ষেত্রে বেশ কয়েক বছর ধরে কেয়া বেশ উদাসীন।

Keya Cosmetics in Share Market

শেয়ারবাজারে কেয়ার অবস্থান সন্তোষজনক নয়। ২০১০ সালের পর থেকে কোম্পানিটি কোন ক্যাশ ডিভিডেন্ড দেয়নি। ২০১১ সালে কেয়া রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ১০০ কোটি টাকা উত্তোলন করে লোন পরিশোধ করার জন্য। লোন পরিশোধ করার জন্য মালিকপক্ষ বিভিন্ন সময়ে শেয়ার বিক্রিও করেছে। কোম্পানিটির স্পন্সর ডিরেক্টরদের শেয়ারহোল্ডিং এই বছরের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ছিল ৪৬%, যা ২০১৭ সালে ছিল ৬৩%।

করোনাভাইরাসের কারণে  যেখানে দেশী ও বিদেশী হাইজিন ও টয়লেট্রিজ প্রোডাক্ট ম্যানুফ্যাকচারাররা  তাদের পণ্যের উচ্চ চাহিদার কারণে প্রফিটে প্রবৃদ্ধি দেখছে, সেখানে কিছু ব্যতিক্রমের মধ্যে একটি হল কেয়া কসমেটিক্স। ২০১৭-১৮ সালের পর কোন annual report প্রকাশিত হয়নি, প্রকাশিত হয়নি কোন quarterly reportও। গত দুই বছর ধরে AGM বন্ধ থাকার পর গত অক্টোবর মাসে ২২তম AGM ক্করে কোম্পানিটি।  এছাড়াও সম্প্রতি কেয়ার রেভিনিউ ও প্রফিট রিপোর্টিং নিয়ে তদন্ত করছে বাংলাদেশের ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং রেগুলেটরি বডি Financial Reporting Council (FRC)।

 

Reference:

  1. https://www.coursehero.com/file/p7oka8c/Chapter-2-Organizational-Overview-21-Introduction-The-Keya-Cosmetics-Ltd-is-one/
  2. https://medium.com/@milky.mahmud/bangladeshs-booming-beauty-market-2c98236647b6
  3. https://www.dhakatribune.com/opinion/special/2019/01/26/the-economy-of-the-fairness-industry
  4. https://bbf.digital/wp-content/uploads/2015/10/20.jpg?189db0&189db0
  5. https://bbf.digital/cosmetics-toiletries-industry
  6. https://docplayer.net/34262676-A-report-on-cosmetic-toiletries-industries-of-bangladesh-mansur-ahamed-ph-d-research-department-jbbc-corporation.html
  7. https://www.globalcosmeticsnews.com/local-players-now-dominate-in-booming-bangladeshi-cosmetics-and-toiletries-market/
  8. https://www.researchgate.net/publication/326468905_Bangladesh's_Dynamic_Toilet_Soap_Market_The_Case_of_Keya
  9. http://milonanjel.blogspot.com/2008/07/advertising-and-promotional-strategy-of.html?m=1
  10. https://www.slideshare.net/ontoromi/analyzing-the-strategic-hr-environment-analysis-of-keya-cosmetics-ltd-under-keya-knit-composite-division
  11. https://www.daily-sun.com/arcprint/details/401521/Names-of-300-loan-defaulters-revealed-/2019-06-23
  12. https://www.termpaperwarehouse.com/essay-on/Report-On-Keya-Super-Beauty-Soap/36955
  13. company website, annual report

 

 

 

1 comment: