Friday, October 26, 2018

Sunk Cost Fallacy: When to fold

নীলক্ষেত যাওয়ার নিয়ত করে বের হইছেন; হঠাত মনে পড়লো, "ধুরু আজকেতো মঙ্গলবার"। আশেপাশে এমন কোন দোকান নাই যে আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত বইটা বা বইগুলা কিনবেন। তো এখন কি করবেন আপনি; বাসায় ফিরে যাবেন নাকি যেহেতু আপনি কিছু সময় নষ্ট করে ফেলেছেন আরো কিছুটা গিয়ে জার্নি টু নীলক্ষেত শেষ করবেন? 

দ্বিতীয় চিন্তাটা যে খুব একটা হেলদি চিন্তা নয়, সেটা নিশ্চয় বলে দেয়া লাগবেনা। নীলক্ষেতের উদাহরণ বাদ দেন, একটা মুভি শুরু করলেন, ১০ মিনিট পর দেখেই বুঝলেন ভুল কইরালছেন কিন্তু চিন্তা করলেন শুরু যখন করছি শেষ করেই উঠি। কোন একটা সিরিজ দেখা শুরু করলেন, প্রথম সিজন ভাল, দ্বিতীয় সিজন খুব একটা জমলোনা তারপরো পরের সিজন দেখে ফেলি এই চিন্তা করে যে দেখি ৩ নং সিজন থেকে মনে হয় ভাল হবে। এভাবেই আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিই, বিশেষ করে যেখানে অর্থ জড়িত। একজন গ্যাম্বলার এটাকে বলবে "Chasing the losses"। ব্রিটিশ প্রবাদ আছে, "Don't throw good money after bad"। ইকোনমিস্টরা এটাকে বলেন Sunk Cost Fallacy. সব ক্ষেত্রে না হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা সবাই এই Fallacyর শিকার হই। ব্যাপারগুলাকে একটু বড় করে দেখলে দুইটা জিনিস বেরিয়ে আসে; ১) Optimism ২) Aversion to Failure। এই দুইটা জিনিস আমাদের লস নিয়ে বের হইতে বাধা দেয়।

A Winning Hand

পোকার খেলায় গ্যাম্বলার বা জুয়াড়িদের মত ট্রেডাররাও Sunk Cost Fallacyর ফাঁদে পড়লে উইনিং হ্যান্ড পাওয়ার ভান করে; ব্লাফ দিতে চায় এবং নিজের লস পজিশন রিকাভার করার চেষ্টা করে। এই প্রসঙ্গে Barings BankNick Leeson এর কথা উল্লেখ করা যায়। Nick Leeson ছিলেন একজন speculative trader, মানে যারা পণ্যের দামের ফ্লাকচুয়েশনের উপর ভিত্তি করে ট্রেডিং করে। (Speculation involves trading a financial instrument involving high risk, in expectation of significant returns. The motive is to take maximum advantage from fluctuations in the market. Speculators are prevalent in the markets where price movements of securities are highly frequent and volatile.)

ক্যারিয়ারের শুরুর দিকেই Leeson অনেকগুলা সাকসেস্ফুল ট্রেডিং করায় ব্যাঙ্ক ম্যানেজমেন্ট তাকে নিজের মত ট্রেড করার সুযোগ করে দেয়, যার পুরো ফায়দা তুলেন তিনি ফলে; উড়াধুড়া ট্রেডিং করেও রিপোর্ট করতেননা বা করা লাগতোনা। ১৯৯৫ এর শেষ দিকে Leeson তার 'মিডাস টাচ' হারায় ফেলেন এবং ট্রেডিং এ বড় লসের সম্মুখীন হন। লসের কথা তিনি গোপন রাখতে থাকেন এবং জাপানে কোবে শহরে বড় ধরণের ভূমিকম্পের সময় ট্রেডিং এ ভুল পজিশন নিয়ে Leeson সবচে বেশি লস খান যা উনি পুষিয়ে উঠতে পারেননাই। ফলস্বরূপ Barings Bank ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি লস নিয়ে দেউলিয়া হয়ে যায়।

Leeson সিঙ্গাপুর জেলে বসে Rogue Trader নামে একটি বই লেখেন। একই নামে ১৯৯৯ সালে মুভিও বের হয়েছে যেটায় অভিনয় করেন Star Wars এর Obi-Wan খ্যাত Ewan Mcgregor ।


Political Overspend

বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে ইলেকশনের আগে পলিটিশিয়ানদের কোটি কোটি অর্থ ব্যয় করতে দেখা যায়। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে রাজনীতির পট পরিবর্তনের কারণে দেশ বা রাজনীতির স্বার্থে নেয়া সিদ্ধান্তগুলো অনেক ব্যয়বহুল হয়। যেমন ব্রিটেন বা জাপানে infrastructural spending অনেক বেশি হয়। ইউএসতে যেমন prison infrastructure spending অনেক বেশি (এত এত আজাইরা টিভি সিরিজতো এইসব ধরাধরি নিয়েই বানানো 😋 )। ইউরোপের দেশগুলা তাদের রেলওয়ে নেটওয়ার্ক উন্নয়নে অনেক বেশি খরচ করে।

Avoiding Sunk Cost pitfalls

সাইকোলজিস্ট এবং গবেষক Jim Everett এই প্রসঙ্গে বলেন, "We are susceptible to these biases. But often we can partially offset them by taking a step back and thinking through the alternatives. Always ask yourself, what would i gain or lose if i stuck with this option and what would i gain or lose if i switched."

সোজা কথা হল একটা রিয়েলিটি চেক দেয়া যেতে পারে; যেসব ধারাবাহিক সিদ্ধান্তগুলোর কারণে বর্তমান পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সিদ্ধান্তগুলো অন্যরকম নিলে কি হতে পারতো। ব্যাপারটা অনেকটা Infinity War মুভিতে Dr. Strange এর ১৪ মিলিয়ন সিচুয়েশন দেখার মত ক্রেজি না হলেও কিছুটা মিলে। অথবা একটা সিম্পল প্রশ্নের উত্তর খোঁজা; If presented with the same choice again, would i make the same decision? If not - why not?

আল্টিমেটলি সবকিছু ঘুরেফিরে পোকার খেলার সেই অলিখিত নিয়মটার দিকেই ঝুঁকে; Any good poker player knows when to fold.



Wednesday, October 17, 2018

ভাওয়াল সন্ন্যাসী রাজা - The King who lived two lives

বই পড়ে মুভি অনেক দেখছি, কিন্তু কোন জায়গা ঘুরে এসে ঐটার কাহিনী নিয়ে মুভি দেখার সুযোগ কখনো আসবে ভাবিনাই। তার উপর জায়গাটাও বেশ কাছেই, গাজীপুরে। যদিও গিয়ে বেশি কিছু পাইনাই, মানে ইতিহাসের ছাপ পাইনাই আরকি; আগের সব বিল্ডিংরে সরকারি কার্যালয়, স্কুল, কোয়ার্টার বানায় ফেলছে। যাইতেও প্যারা হয়নাই বেশি; অনাবিল বাসে করে গাজীপুর চৌরাস্তা, সেখান থেকে অটো করে রাজবাড়ি।

এই ভবনটা একটু কম এডিট করছে 😀
ভাওয়াল জমিদার বংশের রাজা রমেন্দ্রনারায়ণ রায়ের মৃত্যুর পর ফিরে আসার কাহিনী বেশ বিখ্যাত ও চাঞ্চল্যকর। লেখার খাতিরে একটু পেছনে যাওয়া যাক। মোটামুটি ৩০০ বছর আগে ১৭০০ সালের দিকে ভাওয়াল পরগণা জমিদারীর দেওয়ান (Proctor) হন বাংলার প্রথম স্বাধীন নবাব মুর্শিদকুলী খান। মোটা অংকের রাজস্ব দেয়ার লোভ দেখিয়ে অন্য অঞ্চলের হিন্দু জমিদাররা নবাবের কাছ থেকে ভাওয়াল অঞ্চলের জমিদা্রী পান। বিভিন্ন হাত ঘুরে এই জমিদারী যায় কালীনারায়ণ রায়চৌধুরীর কাছে। তার ছেলে রাজেন্দ্রনারায়ণ রায়চৌধুরী এই জমিদারীকে ঢাকা, ময়মনসিংহ, গাজীপুরসহ আরো অনেক এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত করেন। বিখ্যাত সাহিত্যিক কালীপ্রসন্ন ঘোষ ছিলেন তার দেওয়ান। এই রাজেন্দ্রনারায়ণের তিন ছেলে রণেন্দ্র, রমেন্দ্র ও রবীন্দ্রনারায়ণ রায়চৌধুরী ( নামতো না একেকজন কয়েকটা জিলা নিয়া বইসে )।   



জমিদারবাড়ির পুকুর
১৯০৪ সালে রাজেন্দ্রনারায়ণ মারা যাওয়ার সময় তার তিন ছেলেই ছিলেন নাবালক। তারা সাবালক হওয়ার পর তাদের হাতে জমিদারী যায়। কিন্তু উদাসীনতা আর অজ্ঞতার কারণে জমিদারীর দেখার অযোগ্য ছিলেন মোটামুটি তিনজনই। এর মধ্যে রমেন্দ্রনারায়ণের মদ আর নারীর নেশা ছিলো প্রবল। অতিরিক্ত নারীলিপ্সুতার ফল যা হবার তাই হলো, সিফিলিসে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। অনেক ইতিহাসবিদ দাবী করেন, স্বামীর নারীলিপ্সুতায় হতাশ হয়ে রমেন্দ্রর স্ত্রী বিভাবতী দেবী রাজার ব্যক্তিগত ডাক্তার আশুতোষ দাসগুপ্তের সাথে প্রণয়ে জড়িয়ে পড়েন। এদিকে দৃশ্যপটে হাজির হন বিভাবতী দেবীর ভাই সত্যেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী; রমেন্দ্রনারায়ণের এসব দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে জমিদারী হাতিয়ে নেয়ার পায়তারা করতে থাকে সে। পরবর্তীতে রাজাকে রাণী বিভাবতী, রাজার ব্যক্তিগত ডাক্তার আশুতোষ, রাণীর ভাই সত্যেন্দ্রনাথসহ মোটামুটি বিশ জনকে হাওয়া বদলের জন্য দার্জিলিং পাঠিয়ে দেয়া হয়।দার্জিলিং গিয়ে রাজার অবস্থা আরো খারাপ হয়। অনেকে এটাও বলেন, রাণী বিভাবতী দেবী আর তার ভাই মিলে খাবার, ঔষুধ ইত্যাদির মধ্যে বিষ মিশিয়ে রাজাকে তিলে তিলে মারার ষড়যন্ত্র করেন। একদিন এক টেলিগ্রাম আসে যাতে লেখা ছিলো “রমেন্দ্রনারায়ণ ইজ নো মোর”। মৃত্যুর কারণ হিসেবে গলব্লাডারে পাথরের কথা উল্লেখ করেন দার্জিলিঙের সার্জন। শেষকৃত্যের পাট চুকিয়ে জমিদার বাড়িতে এসে পরে কলকাতায় ফিরে যান রাণী বিভাবতী ও তার ভাই। 

কাহিনীতো অন্য জায়গায়; রাজার শেষকৃত্যই যে হয়নাই। সৎকারের দিন প্রচন্ড শিলাবৃষ্টি হয়; উপস্থিত সবাই রাজার মৃতদেহ শ্মশানের কাছে রেখে বৃষ্টি থামার অপেক্ষা করছিল। বৃষ্টি থামার পর গিয়ে দেখে মৃতদেহ গায়েব। শেয়াল কুকুরে মৃতদেহ নিয়ে গেছে ভেবে সবাই ফিরে আসে। এই খবর ধামাচাপার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। তারপরো অনেকের আশা ছিল রাজা ফিরে আসবেন একদিন। এদিকে বছরের পর বছর চলে যায়, রাজার খবর নাই। রাজার বাকি দুইভাই মারা যান; জমিদারী একসময় পুরোপুরি ব্রিটিশদের হাতে চলে যায়। একযুগ পরে ১৯২১ সালে একদিন বুড়িগঙ্গার দক্ষিণ পাশে বাকল্যান্ড বাঁধ এলাকায় এক জটাধারী সন্ন্যাসীর দেখা পাওয়া যায়, অবিকল রমেন্দ্রনারায়ণের মত দেখতে। তার ছোটবোন জ্যোতির্ময়ী দেবীকে খবর দেয়া হলো। তিনি এসে সন্ন্যাসীকে দেখে তো হা! তার উপর সন্ন্যাসীর গায়ের দাগের সাথে রাজার গায়ে শিকারের দাগ আর জন্মদাগের মিল খুঁজে পান তার বোন। উৎসুক মানুষের বিভিন্ন প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেন তিনি; দার্জিলিঙের ঘটনারও সঠিক বর্ণনা দেন। তিনি আরো বলেন, জঙ্গলের সন্ন্যাসীরা তাকে বৃষ্টিভেজা অবস্থায় খুঁজে পায়; তাকে সেবা করে বাঁচিয়ে তুলে। তাদের সাথে বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণের মাধ্যমে আস্তে আস্তে তার স্মৃতি ফেরত এসেছে। 

এসব ঘটনার পর রাজা রমেন্দ্রর আইনজীবিরা জমিদারীর অংশ চেয়ে মামলা করে বসেন। জমিদারী তখন ভোগ করছিলেন বিভাবতী দেবী, তার ভাই সত্যেন্দ্রনাথ এবং তার স্ত্রী। এটাই ঐতিহাসিক ‘ভাওয়াল সন্ন্যাসী মামলা’ নামে খ্যাত। দুইপক্ষেই অনেক যুক্তি, প্রমাণের সাহায্য নেয়া হয়। রাজা নাকি অনেক শিক্ষিত ছিলেন, সন্ন্যাসী শিক্ষিত না- এই যুক্তিও দেখানো হয়; পরে প্রমাণিত হয় রাজাও মোটামুটি নিরক্ষরই ছিলেন (খেলাধুলায় মত্ত ছিলেন তাই শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাননাই )। রাজা ইংরেজি, বাংলা বলতে পারতেন; সন্ন্যাসী উর্দুতে কথা বলতেন। পরে রাজার ইংরেজি আর বাংলাভাষাজ্ঞানের প্রমাণ হিসেবে যে চিঠিগুলো আদালতে পেশ করা হয় ঐগুলো জাল বলে প্রমাণিত হয়। এভাবে ১৯৩০ সালে শুরু হওয়া মামলা ১৯৩৬ এ শেষ হয়। আরেকটি মামলা ১৯৪৬ সালে শেষ হয়; দুটি মামলার রায়ই রাজার পক্ষে যায়। পক্ষে রায় পেয়েও বেশি লাভ হয়নাই; মামলা জিতার কয়েক মাস পরেই মারা যান রাজা রমেন্দ্র। বর্তমানে ভাওয়াল এস্টেটের কর্মকাণ্ড গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ভূমি সংস্কার বোর্ড পরিচালনা করে।  

এইরকম চাঞ্চল্যকর কাহিনী নিয়ে ওপার বাংলায় ইতোমধ্যে মুভি বানানো হয়েছে; নাম ছিল “সন্ন্যাসী রাজা”; অভিনয় করেছিলেন মহানায়ক উত্তম কুমার। আরেকটি মুভি মুক্তি পাবে পরের মাসের ১২ তারিখ; নাম “এক যে ছিলো রাজা”। নাম ভূমিকায় অভিনয় করবেন “জাতিস্মর” খ্যাত যীশু সেনগুপ্ত;আমাদের দেশের অভিনেত্রী জয়া আহসানও আছেন মুভিটিতে।
আমাদের দেশের কাহিনী নিয়ে বাইরে মুভি হয়ে যাইতেছে, আর আমরা............... 
 

Ganesh Gaitonde, God Complex and Hindu Mythology (Part 2)

https://jbamit.blogspot.com/2018/10/blog-post.html

"Sacred Games" সিরিজের পর্বগুলোর নাম হিন্দু মিথোলজির কিছু ক্যারেক্টারের নামানুসারে দেয়া।পর্ব ১ (অশ্বত্থামা)-র কথা আগের লেখাটায় ছিলো; বাকি সাতটার ব্যাপারে লিখছি।

পর্ব ২ (হলাহল): হিন্দু মিথোলজিতে সমুদ্র মন্থনের বা সমুদ্র নিংড়ানোর উল্লেখ আছে যেখানে দেবতা (Gods) ও অসুরেরা (Demons) মিলে মন্থনের মাধ্যমে অমৃত (অমরত্বের পানীয়) বানানোর পরিকল্পনা করে। এজন্য তারা সাপদের রাজা বাসুকির সাহায্য নেয়। কিন্তু বাসুকির বিষাক্ত ধোঁয়ায় অমৃত তৈরির আগেই হলাহল নামের বিষ তৈরি হয়ে যায় যাতে দেবতা, অসুর সব মারা যেতে থাকে। দেবতা শিব এই বিষ নিজে পান করার মাধ্যমে সবাইকে রক্ষা করেন। "Sacred Games" এ শিবের এই কল্পিত চরিত্র হল ইন্সপেক্টর সারতাজ সিং আর অসুর হল গাইতোন্ডে। তাদের কথোপকথনের শুরুতেই তারা একে অপরের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চায় যেভাবে দেবতা ও অসুরেরা অমৃত বানিয়ে অমর হতে চেয়েছিলো। তারা দুজন কথা বলতে বলতেই সারতাজ সিং এর বাবা দিল্বাগ সিংয়ের কথা, ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাস, আন্তর্জাতিক গুপ্তচরবৃত্তির পরিকল্পনা, ২৫ দিনের মধ্যে মুম্বাই শহর ধবংস করে ফেলার ওয়ার্নিং- অনেকটা অমৃত বানাতে গিয়ে হলাহল তৈরি হয়ে যাওয়ার সাথে মিলে। ৮ নং পর্বে নিজের শহর মুম্বাই রক্ষা করতে গিয়ে সারতাজ সিং এর আংগুল হারানো শিবের বিষ পান করার রূপক।


পর্ব ৩ (আতাপি-বাতাপি): মহাভারত মতে আতাপি বাতাপি দুই ভাই, দুইটাই রাক্ষস বা অসুর। তারা পথিকদের আপ্যায়নের লোভ দেখিয়ে ধোঁকা দিতো, তারপর তাদের মেরে সব লুট করে নিতো। তারা তাদের রূপ পরিবর্তন করতে পারতো।

মামার এই ডায়লগ খুব খাইসে পাবলিক
এখানে আতাপি বাতাপি হল গাইতোন্ডের দুই সহযোগী- বান্টি ও বড় বদরিয়া; বান্টি গোঁড়া হিন্দু আর বদরিয়া গোঁড়া মুসলমান। বান্টি গাইতোন্ডেকে রাজি করায় ভোসলের সাথে যোগ দিতে আর পরে ধোঁকা দেয়। বড় বদরিয়া ইসার ভাতিজির বিয়েতে গিয়ে গাইতোন্ডেকে ধোঁকা দেয়। বান্টি ও বদরিয়ার গোঁড়া ধার্মিক হয়েও শুধুমাত্র স্বার্থের জন্য অন্য ধর্মের উৎসবে যোগ দেয়া - আতাপি বাতাপির রূপ পরিবর্তন করার রূপক। 

ছবিতে বান্টির এই ডায়লগ খুব বিখ্যাত হইসে বলতে হবে; যদিও এই কথা আরেকটি হিন্দি মুভি- Golmaal-3 তে মুকাভিনয় করে দেখানো হয়েছিলো 😜।


পর্ব ৪ (ব্রহ্মহত্যা) : ব্রহ্মহত্যা মানে ব্রাহ্মণ হত্যা মানে মানুষ হত্যা; যেকোন ধর্ম মতে যেটা মহাপাপ। প্রথম পর্বেই গাইতোন্ডে তার মাকে পাথর দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে। পরে ভোট আদায়ের জন্য এবং নিজের স্ত্রী হত্যার প্রতিশোধ নিতে ব্যাপকহারে নিরাপরাধ মুসলমানদের হত্যা করে।

পর্ব ৫ (সারমেয়): সারমেয় মানে কুকুর। In the long run, everyone is a dog with a leash. 
সারমেয়র মাধ্যমে ইন্সপেক্টর সারতাজ সিংকে বোঝানো হয়েছে যে কিনা সত্য ও ন্যায়ের পথে থাকতে চেয়েও অন্যায় কাজ সহ্য করতে বাধ্য হয়। Bengali Bura case এ মিথ্যা সাক্ষী দিতে বাধ্য হয় শুধুমাত্র বান্টিকে ধরার জন্য এক্সট্রা পুলিশফোর্স চেয়েছিলো বলে।

পর্ব ৬ (প্রেতকল্প): Pretakalpa is the rites to perform the cremation of a Hindu. এই পর্বেই সারতাজের বন্ধু কাটেকার মারা যায়। সারতাজ বন্ধুর হত্যাকারীকে হত্যা করে নিজের আগের সত্ত্বাকেও একরকম হত্যা করে। 
যারা সিরিজ দেখেছেন তারা ভালই বুঝবেন মিমটা

পর্ব ৭ (রুদ্র):  হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ বেদের প্রথম খন্ড ঋকবেদ মতে রুদ্র হল ভয়, প্রচন্ড ঝড় এসবের দেবতা। Sacred Games এ ইসার বাহিনী যখন গাইতোন্ডের স্ত্রী সুভদ্রাকে হত্যা করে, তখন প্রচন্ড রাগে গাইতোন্ডে নিরীহ মুসলমানদের বস্তিতে আগুন ধরিয়ে সব লন্ডভন্ড করে দেয়।

পর্ব ৮ (ইয়াতি): মহাভারত ও ভাগবত পুরাণ মতে, ইয়াতি তার বউয়ের দাসীর সাথে পরকীয়া করার অপরাধে তার শ্বশুর তাকে অভিশাপ দেয় এবং তারে বুড়া বানায় দেয় (লও ঠেলা 😛)। পরে ইয়াতি তার ছেলের সাথে বয়স অদলবদল করে আবার হারানো যৌবন ফিরে পায় (ভাগ্য ভাল আমার বাপ এসব দেখেনা বা পড়েনা 😛) । Sacred Games এ এই পর্বে গাইতোন্ডের তিন নং বাপের উদয় হয় যে একজন ধর্মগুরু; এই ক্যারেক্টারটি করেছেন পঙ্কজ ত্রিপাটি। জেলে লোক পাঠিয়ে সে গাইতোন্ডেকে রক্ষা করে যাতে সে গাইতোন্ডের ঐশ্বর্য, প্রতিপত্তি নিজের করে নিতে পারে।


(চলবে)

Friday, October 12, 2018

NAFTA or Nah-FTA?

গত ২৭ আগস্ট আমেরিকা এবং মেক্সিকো আগের “NAFTA” চুক্তি বাতিল করে নতুন বাণিজ্য চুক্তি করতে রাজি হয়েছে। হাস্যকর হলো আরেক সদস্যদেশ কানাডা ছাড়াই তারা দুই হ্যাডম মিলে দুই যুগ বয়সের একটা চুক্তি বাতিল করার জন্য মিটিং করসে, ডিসিশনও নিয়ে ফেলসে। পাত্তাই দিলোনা কানাডারে

কানাডা অবশ্য শুরু থেকেই উপরে উপরে যুক্ত ছিলো, active participation দেখায়নাই, এমনকি সোমবারের মিটিং এ আসেওনাই। ফাপর নিতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত নিজের পায়ে কুড়াল মারলো নাকি সেটা সময়ই বলে দিবে। অলরেডি steel, aluminium এসবে ট্যারিফ খাইতেসে, পরে imported car এর উপর ট্যারিফ খাইলে ঠ্যালা বুঝবে। কয়েকমাস আগে থেকেই আমেরিকা রীতিমত হুমকি দিয়ে রাখসে auto import এ ট্যারিফের ব্যাপারে। এই ব্যাপারে EU যেমন ধুমধাম করে “retaliatory package” দাঁড়া করায় ফেলসিলো, কানাডা ঐরকম কিছু করার লক্ষণও দেখায়নাই। যদিও তাদের বড়বড় ইকোনমিস্ট, অটো সাপ্লাইয়াররা বলতেসে, “We have no other options but to retaliate; Not responding is not an option.” কিন্তু এই ধরণের retaliation এ যেতে কানাডাকে বড় ধরণের ঝুঁকি ও চাপ নিতে হবে আবার এখনি অ্যাকশনে না গেলে বড় ধরণের recession এর সম্ভাবনাও অগ্রাহ্য করা যাচ্ছেনা।

NAFTA নিয়ে গড়িমসি অবশ্য কানাডা গত এক বছর ধরেই করে আসছে; কারণ হিসেবে দুইটা বিষয় তারা বলে ১) Anti-dumping (AD) and countervailing duties (CVD) নিয়ে US এর সাথে dispute ২) তাদের local dairy industry বাঁচানোর চেষ্টা। বাইরের ম্যানুফ্যাকচারাররা যদি US তে ন্যায্য মূল্য (Fair Value)র চেয়ে কম মূল্যে জিনিস বিক্রি করে তখন এটাকে Dumping বলে। আর ফরেন কোন দেশ যদি অনেক বেশি subsidy আর tax benefit দেয় যাতে সস্তায় জিনিস বিক্রি করা যায়, তাকে countervailing বলে। বর্তমান NAFTA’র চ্যাপ্টার ১৯ এ এটা নিয়ে উল্লেখ আছে; কানাডা আর মেক্সিকো যাতে এই ব্যাপারে কোন সুবিধা করতে না পারে ঐ ব্যাপারে সিস্টেমও করা আছে

আরেক গলার কাঁটা হলো কানাডার dairy industry। কানাডা সরকার import quota এবং high tariff দিয়ে তাদের dairy industryকে একটু “একঘরে” করে রাখতে চাচ্ছে যেটা আবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পছন্দ হচ্ছেনা। এটার কারণ অবশ্য অন্য, US এর Local dairy industryই ভুগতেছে অতি উৎপাদনের (over production) প্যারায়। US চাইতেসে কানাডার dairy industry তে ঢুকে নিজেদের বোঝা হালকা করতে, ঐদিকে কানাডা গোঁ ধরে বসে আছে “অনেক ছাড় দিসি, আর না”। আবার এই dairy industry ছাড়া NAFTAর ব্যাপারে US-Canada মিলে যাওয়ার আর কোন উপায় আপাতদৃষ্টিতে নাই মনে হচ্ছে।  

আবার ফিরে আসি auto import এ ট্যারিফের ব্যাপারে। US যদি ২৫%ও ট্যারিফ দেয় কানাডা থেকে আমদানিকৃত কারের উপর,কানাডার কার ম্যানুফ্যাকচারিং ৯০০,০০০ ইউনিট কমবে। এদিকে কানাডা সরকার “ভাবতেছে” ১০% পালটা ট্যারিফ দিবে স্টিল ও আলুমিনিয়ামের উপর; যেটা আল্টিমেটলি trade war এর দিকে চলে যাচ্ছে। Toronto-Dominion Bank বলতেছে, কানাডা ১৬০,০০০ জব হারাতে যাচ্ছে, জিডিপি কমে যেতে পারে ০.৩-০.৫% । 

Source:



Wednesday, October 10, 2018

পাবলো এস্কোবার, গণেশ গাইতোন্ডে এবং হিন্দু মিথোলজি (পর্ব-১)

মেক্সিকান কোকেইন ডিলার পাবলো এস্কোবারকে নিয়ে বানানো নেটফ্লিক্সের সিরিজ “Narcos” দেখেনাই এমন মানুষ খুব কম আছে। ব্রাজিলিয়ান অভিনেতা Wagner Maniçoba de Moura ফাটায় দিছেন একদম। এস্কোবারকে নিয়ে অবশ্য আরো টিভি সিরিজ ও মুভি বানানো হয়েছে; কিছুদিনের মধ্যে আসতেছে হাভিয়ের বারদেম ও পেনেলোপে ক্রুজের "Loving Pablo"। আমার মতে এস্কোবারের রুথলেসনেস সবচে ভালভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন কলম্বিয়ান অভিনেতা Andrés Parra, নেটফ্লিক্সেরই আরেকটা সিরিজ "Pablo Escobar: le patron du mal" এ। এছাড়াও "Escobar: Paradise Lost (2014)", "Infiltrator (2015)" মুভিগুলোতেও এস্কোবার ও তার সাথের ড্রাগলর্ডদের কাহিনী দেখানো হয়েছে।

Narcos
Loving Pablo
এখন আসি গণেশ গাইতোন্ডে প্রসঙ্গে; এবং আবার সেই নেটফ্লিক্স। কয়েক মাস আগে বের হল নেটফ্লিক্সের আরেকটি সিরিজ "Sacred Games"। এটা নিয়ে বিভিন্ন ক্রিটিকদের কিছু লাইন কোট করতেছি- "Sacred Games, the Netflix original series, based on author Vikram Chandra's epic magnum opus,  co-directed by Anurag Kashyap and Vikramaditya Motwane, is a satirical storytelling of religion facade and political filthiness of India. Saif Ali Khan as Sartaj Singh, played a role of honest, low-ranking police officer with dependency on anxiety pills. Nawazuddin Siddiqui as Ganesh Gaitonde, played a role of drug lord with a God-complex." সাইফ আলি খান বহুত আউল ফাউল মুভি করছে জীবনে, কিন্তু এই সিরিজের জন্য অনেক পরিশ্রম করছে, ওজন বাড়াইছে এবং আমার মতে ওর সেরা কাজ দেখাইছে সিরিজটায়। আর নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকির কথা আর কি বলবো, he does have a midas touch। অনুরাগ কশ্যপ গালাগালি ছাড়া মুভি/সিরিজ বানাননা এবং পুরা সিরিজটায় গালাগালিকে একটা শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। 

"Sacred Games" এর পর্বগুলোর নাম হিন্দু মিথোলজির কিছু ক্যারেক্টারের নামানুসারে দেয়া। ক্যারেক্টারগুলো সম্পর্কে যতদূর সংক্ষেপে সম্ভব তুলে ধরার চেষ্টা করবো।

পর্ব ১ (অশ্বত্থামা)
অশ্বত্থামা, প্রাচীন ভারতের দুটি প্রধান মহাকাব্যের একটি মহাকাব্য, মহাভারতের (অন্যটি রামায়ণ) অন্যতম প্রধান একটি চরিত্র, যার বাপ অস্ত্রগুরু দ্রোণাচার্য, মা কৃপি। এক লাইনে মহাভারত সম্পর্কে বললে এটা হল প্রাচীন ভারতের দুই বংশ, কৌরব(এন্টাগনিস্ট) ও পান্ডবদের(প্রোটাগনিস্ট) মধ্যে বিবাদ ও পরে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ নিয়ে কাহিনী; যদিও এই মহাকাব্যের কাহিনী এতই বিস্তৃত যে যুদ্ধের অনেক আগে থেকে এর কাহিনী শুরু এবং অনেক পরে শেষ (অথবা শেষ না!!)। তো এই কৌরব ও পান্ডবদের যুদ্ধবিদ্যা শিখিয়েছিলেন দ্রোণাচার্য; তার ছেলে বীরযোদ্ধা হবে জানা কথা। তার উপর দ্রোণাচার্য ধ্যান, তপস্যা করে ছেলেকে অমরত্ব পাইয়ে দিয়েছিলেন বলেও লেখা আছে।

তো এই বাপ ছেলে দুইজনই কৌরবদের পক্ষে যুদ্ধ করেছিল; যুদ্ধের এক পর্যায়ে কিছুটা অন্যায়ভাবেই পান্ডবরা দ্রোণাচার্যকে হত্যা করে। বাবার হত্যার প্রতিশোধ নিতে অশ্বত্থামা রাতের অন্ধকারে পাঁচ পান্ডবকে (পান্ডবরা পাঁচ ভাই, আর কৌরবরা ১০০ ভাই আর এক বোন :P)  হত্যার জন্য তাদের আক্রমণ করে, ভুলবশত পাঁচ ভাইয়ের পাঁচ ছেলের শিরোচ্ছেদ করে ফেলে। যাই হোক সন্তানদের হত্যার প্রতিশোধ নিতে পাঁচ পান্ডবের একজন, বীর অর্জুন আর অশ্বত্থামার মধ্যে যুদ্ধ হয়। হিন্দু পুরাণ বা মহাকাব্যগুলোতে যেসব বীরযোদ্ধাদের কথা লেখা আছে তাদের সবার কাছেই কিছু ডেডলি অস্ত্র ছিলো বলে উল্লেখ আছে। এই যেমন অর্জুনের কাছে ছিল ব্রহ্মাস্ত্র, পাশুপাত অস্ত্র ইত্যাদি; এগুলার যেকোন একটা মারলে কাহিনী খতম। আর অশ্বত্থামার কাছে ছিল নারায়ণ অস্ত্র, যেটা কোন বংশের উদ্দেশ্যে মারলে ঐ বংশ একবারে শেষ।  

যুদ্ধের মধ্যে অশ্বত্থামার কি মনে হইছে, মারছে নারায়ণ অস্ত্র ছুইড়া, অর্জুন বেচারা কিছু না পাইয়া পাশুপাত মারলো। দুনিয়ার অবস্থা খারাপ দেইখা কৃষ্ণ আইসা তাদেরকে থামান। অর্জুন তার অস্ত্র ফিরায় নিলেও অশ্বত্থামাতো আরেক মাল; অস্ত্র নাকি সে ফিরাইতে শিখেনাই। অবস্থা বেগতিক দেখে কৃষ্ণ তাকে বলেন একটা টার্গেট উদ্দেশ্য করে পাঠাইতে (তীর ছুইড়া এত কথা কেম্নে বলে জানিনা!!)।অশ্বত্থামা অর্জুনের ছেলে অভিমুন্যর(যুদ্ধে মারা যায় সে) বউ উত্তরার গর্ভে থাকা সন্তানের উদ্দেশ্যে অস্ত্র পাঠিয়ে দেয় যাতে পান্ডবরা একেবারে নির্বংশ হয়ে যায়। পরে কৃষ্ণের আশীর্বাদে অবশ্য সেই বাচ্চা ভালভাবেই জন্ম নেয়।

অশ্বত্থামার এরকম নিষ্ঠুরতা দেখে কৃষ্ণ তাকে অভিশাপ দেন যে সে যে অমরত্ব পেয়েছিলো সেটা অভিশাপ হবে তার জন্য; পৃথিবী ধবংস পর্যন্ত সে বেঁচে থাকবে এবং যতভাবে ভোগা সম্ভব ভুগবে। তার মানে এখনো তার বেঁচে থাকার কথা। একদম স্পেসিফিক প্রমাণ পাওয়া না গেলেও ভারতের কোন এক গ্রামে আসিরঘর দুর্গে মোটামুটি ১০-১২ ফুট লম্বা একজনকে নাকি দেখা গেছে; যদিও আগেই বলছি ভাল কোন প্রমাণ নাই।
অশ্বত্থামা 
তো যা বুঝানোর জন্য এত কিছু বলা সেই "Sacred Games" এ ফিরে আসি এখন। গণেশ একনাথ গাইতোন্ডে (নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী) এপিসোড ওয়ানের শেষে সুইসাইড করার পরও সে তার জীবনগল্পে অমর হয়ে যায়। Not only was he alive in the beginning after most people he cared about died, his voice was omnipresent in the remainder of the season-making him immortal। এই গল্পে গাইতোন্ডেই অশ্বত্থামা। স্ত্রীর মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে সে একরাতেই ৮০ জন মুসলমানকে হত্যা করে। এপিসোড আটের (য়য়াতি) শেষে তাকে প্রচুর টর্চার করা হলেও সে জীবিত থাকে তার কৃত কর্মের অভিশাপে।
Sacred Games

(চলবে)

Friday, October 5, 2018

Zero-sum Economy and Productivity Paradox

নৃতত্ত্ববিদ David Graeber বলেছিলেন, আমরা আমাদের কাজের ৩০% অনেকটা লোক দেখানো অথবা অন্যজনের সাথে প্রতিযোগিতা অথবা একটা স্ট্যাটাস বা fake image বজায় রাখার জন্য করি। তিনি এগুলোকে বলেছিলেন, “Bullsh*t Jobs”। আরো কিছু কাজ থাকে স্রেফ Hierarchy এবং Protocol মানার জন্য সময়ক্ষেপণ করা হয়, সরকারি কর্মজীবিরা যা হাড়ে হাড়ে টের পান সবচেয়ে বেশী।

বৈশ্বিক অর্থনীতিতে “Automation” যেমন অনেক গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে তেমনি দেখা হচ্ছে হুমকি হিসেবেও। চাকরি খেয়ে দেয়ার ভয়তো আছেই, আগ বাড়িয়ে অনেকেই বলে দিচ্ছেন “Robots will kill us.”। আমাদের দেশেও এতদূর যাওয়া হচ্ছেনা, হাজার হোক আমরা শান্তিপ্রিয় জাতি । দেশের অনেক কোম্পানিতেই “Automation” বলতে MS Excel Dashboard preparationই বোঝায়। তবে বৈশ্বিক অবস্থা বিবেচনায় বিশেষ করে Financial Services কোম্পানিগুলোতে data entry এবং primary level business analysis এর চাকরিগুলো “Automation” এর হুমকিতে রয়েছে বলতেই হয়।

Automation, Automation করে হৈ-হৈ রব ফেললেও যার জন্য এত কিছু সেই Productivity Growth আর হলো কই? International Monetary Fund (IMF) এর রিপোর্টে দেখানো হয়েছে, Global Financial Crisis এর পর বিশ্বের উন্নত দেশগুলোই কেবল কিছুটা Productivity Growth এর সুফল পেয়েছে; উন্নয়নশীল এবং স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ক্ষেত্রে যেটি নিম্নমুখী।



এক্ষেত্রে Chief Economist of Bank of England Andrew Haldane বলেন, সব দেশে সব কোম্পানি একসাথে এই সুযোগ নিতে পারেনা, এমনকি একই দেশের একই Industryর কোম্পানিও না। Mr. Haldane dispersion এর দোহাই দিয়ে পার পেলেও David Graeber এর “Bullsh*t Job” theoryই যেন বেশি খাটে এখানে। তার মতে শেষ কথা এটাই যে, ঝরে পড়া কর্মজীবিরা শেষ পর্যন্ত Bullsh*t Job করতে বাধ্য হয়।

কাজের কত পরিমাণ ফালতু তারচে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে “Zero Sum Function”। ধরেন আপনি একটা Brand X নিয়ে অনেক আশাবাদী , এটাকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান। আপনি শ্রম দিলেন, সফল হলেন। আরেকজনের Brand X এবং Y এর যেকোন একটা বাজারে দাড়া করানোর উপায় ছিলো, সে Brand X বাছাই করলো Y বাদ দিয়ে। Brand X থেকে সে যা চাওয়ার তা পেলোনা; Brand Y এর opportunity cost তো আছেই এবং আরেকটি Brand Y বাজারে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেলো। ব্যস দ্বিতীয়জন পড়ে গেলেন Zero Sum Function এর ফাঁদে।

তো আমরা যদি আমাদের সব কাজ automate করেও ফেলি, প্রথমত আমাদের অবসর সময় অনেক বাড়বে ঠিকি, কিন্তু সে সময়ের কতটুকু আমরা পুরাপুরি productivity growth এ ব্যবহার করতে পারবো সেটা প্রশ্নসাপেক্ষ। Human nature এর ধরণে যেটা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি তা হলো আমাদের zero sum activities অনেক বেড়ে যাবে।

So, Robots will not kill us, we will kill us.