মেক্সিকান কোকেইন ডিলার পাবলো এস্কোবারকে নিয়ে বানানো নেটফ্লিক্সের সিরিজ “Narcos” দেখেনাই এমন মানুষ খুব কম আছে। ব্রাজিলিয়ান অভিনেতা Wagner Maniçoba de Moura ফাটায় দিছেন একদম। এস্কোবারকে নিয়ে অবশ্য আরো টিভি সিরিজ ও মুভি বানানো হয়েছে; কিছুদিনের মধ্যে আসতেছে হাভিয়ের বারদেম ও পেনেলোপে ক্রুজের "Loving Pablo"। আমার মতে এস্কোবারের রুথলেসনেস সবচে ভালভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন কলম্বিয়ান অভিনেতা Andrés Parra, নেটফ্লিক্সেরই আরেকটা সিরিজ "Pablo Escobar: le patron du mal" এ। এছাড়াও "Escobar: Paradise Lost (2014)", "Infiltrator (2015)" মুভিগুলোতেও এস্কোবার ও তার সাথের ড্রাগলর্ডদের কাহিনী দেখানো হয়েছে।
Narcos |
Loving Pablo |
"Sacred Games" এর পর্বগুলোর নাম হিন্দু মিথোলজির কিছু ক্যারেক্টারের নামানুসারে দেয়া। ক্যারেক্টারগুলো সম্পর্কে যতদূর সংক্ষেপে সম্ভব তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
পর্ব ১ (অশ্বত্থামা)
অশ্বত্থামা, প্রাচীন ভারতের দুটি প্রধান মহাকাব্যের একটি মহাকাব্য, মহাভারতের (অন্যটি রামায়ণ) অন্যতম প্রধান একটি চরিত্র, যার বাপ অস্ত্রগুরু দ্রোণাচার্য, মা কৃপি। এক লাইনে মহাভারত সম্পর্কে বললে এটা হল প্রাচীন ভারতের দুই বংশ, কৌরব(এন্টাগনিস্ট) ও পান্ডবদের(প্রোটাগনিস্ট) মধ্যে বিবাদ ও পরে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ নিয়ে কাহিনী; যদিও এই মহাকাব্যের কাহিনী এতই বিস্তৃত যে যুদ্ধের অনেক আগে থেকে এর কাহিনী শুরু এবং অনেক পরে শেষ (অথবা শেষ না!!)। তো এই কৌরব ও পান্ডবদের যুদ্ধবিদ্যা শিখিয়েছিলেন দ্রোণাচার্য; তার ছেলে বীরযোদ্ধা হবে জানা কথা। তার উপর দ্রোণাচার্য ধ্যান, তপস্যা করে ছেলেকে অমরত্ব পাইয়ে দিয়েছিলেন বলেও লেখা আছে।
তো এই বাপ ছেলে দুইজনই কৌরবদের পক্ষে যুদ্ধ করেছিল; যুদ্ধের এক পর্যায়ে কিছুটা অন্যায়ভাবেই পান্ডবরা দ্রোণাচার্যকে হত্যা করে। বাবার হত্যার প্রতিশোধ নিতে অশ্বত্থামা রাতের অন্ধকারে পাঁচ পান্ডবকে (পান্ডবরা পাঁচ ভাই, আর কৌরবরা ১০০ ভাই আর এক বোন :P) হত্যার জন্য তাদের আক্রমণ করে, ভুলবশত পাঁচ ভাইয়ের পাঁচ ছেলের শিরোচ্ছেদ করে ফেলে। যাই হোক সন্তানদের হত্যার প্রতিশোধ নিতে পাঁচ পান্ডবের একজন, বীর অর্জুন আর অশ্বত্থামার মধ্যে যুদ্ধ হয়। হিন্দু পুরাণ বা মহাকাব্যগুলোতে যেসব বীরযোদ্ধাদের কথা লেখা আছে তাদের সবার কাছেই কিছু ডেডলি অস্ত্র ছিলো বলে উল্লেখ আছে। এই যেমন অর্জুনের কাছে ছিল ব্রহ্মাস্ত্র, পাশুপাত অস্ত্র ইত্যাদি; এগুলার যেকোন একটা মারলে কাহিনী খতম। আর অশ্বত্থামার কাছে ছিল নারায়ণ অস্ত্র, যেটা কোন বংশের উদ্দেশ্যে মারলে ঐ বংশ একবারে শেষ।
যুদ্ধের মধ্যে অশ্বত্থামার কি মনে হইছে, মারছে নারায়ণ অস্ত্র ছুইড়া, অর্জুন বেচারা কিছু না পাইয়া পাশুপাত মারলো। দুনিয়ার অবস্থা খারাপ দেইখা কৃষ্ণ আইসা তাদেরকে থামান। অর্জুন তার অস্ত্র ফিরায় নিলেও অশ্বত্থামাতো আরেক মাল; অস্ত্র নাকি সে ফিরাইতে শিখেনাই। অবস্থা বেগতিক দেখে কৃষ্ণ তাকে বলেন একটা টার্গেট উদ্দেশ্য করে পাঠাইতে (তীর ছুইড়া এত কথা কেম্নে বলে জানিনা!!)।অশ্বত্থামা অর্জুনের ছেলে অভিমুন্যর(যুদ্ধে মারা যায় সে) বউ উত্তরার গর্ভে থাকা সন্তানের উদ্দেশ্যে অস্ত্র পাঠিয়ে দেয় যাতে পান্ডবরা একেবারে নির্বংশ হয়ে যায়। পরে কৃষ্ণের আশীর্বাদে অবশ্য সেই বাচ্চা ভালভাবেই জন্ম নেয়।
অশ্বত্থামার এরকম নিষ্ঠুরতা দেখে কৃষ্ণ তাকে অভিশাপ দেন যে সে যে অমরত্ব পেয়েছিলো সেটা অভিশাপ হবে তার জন্য; পৃথিবী ধবংস পর্যন্ত সে বেঁচে থাকবে এবং যতভাবে ভোগা সম্ভব ভুগবে। তার মানে এখনো তার বেঁচে থাকার কথা। একদম স্পেসিফিক প্রমাণ পাওয়া না গেলেও ভারতের কোন এক গ্রামে আসিরঘর দুর্গে মোটামুটি ১০-১২ ফুট লম্বা একজনকে নাকি দেখা গেছে; যদিও আগেই বলছি ভাল কোন প্রমাণ নাই।
অশ্বত্থামা |
Sacred Games |
No comments:
Post a Comment